৫মার্চ ১৯৭১: গণহত্যার প্রতিবাদে উত্তাল সারা দেশ বিজয়নগর বিজয়নগর নিউজ প্রকাশিত: ২:২১ অপরাহ্ণ, মার্চ ৫, ২০২২ March 5, 2018 | 1:08 pm3Shares আসাদ জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্টবিজ্ঞাপন ঢাকা: ৫ মার্চ ১৯৭১। মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি পর্বের শেষ ধাপে বাংলাদেশ। এরই মধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, সিলেটসহ সারা দেশে নিরস্ত্র মানুষের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে গোটা দেশকে রক্তে রঞ্জিত করে পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী। গণহত্যার প্রতিবাদে মুখর হয়ে ওঠে সমগ্র বাঙালি জাতি। শহরে-বন্দরে, গ্রামে-গঞ্জে, শ্রমিক, কৃষক, ছাত্র-জনতা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। শাসকগোষ্ঠী এই আন্দোলন দমন করার জন্য সর্বত্র পশুশক্তির আশ্রয় নেয়। কেবল ঢাকা শহরেই শত শত মানুষের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়। বর্বরোচিত পন্থায় নিরীহ জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে গণহত্যার মাধ্যমে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে ইয়াহিয়া-ভুট্টো।বিজ্ঞাপন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ ৫ মার্চ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ আজ ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, সিলেট ও বাংলাদেশের অন্যান্য স্থানে নিরস্ত্র জনতাকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে আমি তার তীব্র নিন্দা জানাই। তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর এই নির্যাতনমূলক কাজের নিন্দা করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। অথচ আমরা জানি বিদেশি হামলা থেকে দেশকে রক্ষার জন্যই এই সব অস্ত্র ব্যবহৃত হবার কথা। পশ্চিম পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তাজউদ্দীন বলেন, নির্বাচতি জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি বিভিন্ন মহল থেকে উঠেছে। এই সময় পশ্চিম পাকিস্তানের সাধারণ মানুষেরও উচিত বাংলাদেশের নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের ওপর গণহত্যা বন্ধের দাবি তোলা।বিজ্ঞাপন পূর্ব পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ওয়ালী গ্রুপ) সভাপতি মোজাফ্ফর আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আলতাফ হোসেন যুক্ত বিবৃতিতে অভিযোগ করেন, ‘পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়াশীল শাসকগোষ্ঠী দেশে গণতন্ত্র বিকাশের পথ রুদ্ধ করেছে। জাতীয় পরিষদের অধিবেশন বাতিল করেছে। শান্তিপূর্ণভাবে গণ-প্রতিনিধিদের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর অস্বীকার করেছে। বাংলার জনগণের স্বাধিকার প্রতিষ্ঠা, অর্থনৈতিক মুক্তি প্রভৃতি দাবিকে নস্যাৎ করার জন্য নানা রকম হীন ষড়যন্ত্র ও যাবতীয় নির্যাতনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এরই প্রতিবাদে শহরে-বন্দরে, গ্রামে-গঞ্জে, শ্রমিক, কৃষক, ছাত্র-জনতা, বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে। শাসক গোষ্ঠী এই আন্দোলন দমন করার জন্য সর্বত্র পশুশক্তির আশ্রয় গ্রহণ করেছে। কেবল ঢাকা শহরেই শত শত মানুষের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়েছে। তারা এ দেশে সর্বত্র একই বর্বরোচিত পন্থায় নিরীহ জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে এবং গণহত্যা করে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে। এহেন গণহত্যা চলতে থাকলে জনগণের পক্ষে পরিবেশ শান্ত রাখা সম্ভব হবে না। ফলে কোনো মারাত্মক পরিস্থিতির উদ্ভব হলে শাসকগোষ্ঠীকেই দায়ী হতে হবে। পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন (মতিয়া গ্রুপ) আয়োজিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের জনসভায় মতিয়া চৌধুরী বলেন, বাংলার স্বাধীনতা আন্দোলনের সংগ্রামকে সার্থক করার জন্য মুক্তিবাহিনী গঠন করতে হবে। সরকার যদি মনে করেন রক্ত নিয়ে বাঙালিকে দমন করা যাবে, তাহলে ভুল করেছেন। ঘটনা যাই ঘটুক, বাংলার বুকে স্বাধিকারের যে পতাকা আজ উড়ছে, তা নামানো যাবে না।বিজ্ঞাপন লড়াইয়ের চরিত্র সম্পর্কে তিনি বলেন, কারফিউ উঠলে নতুন পর্যায়ে সংগ্রাম শুরু হবে। যে সংগ্রামকে সার্থক করার জন্য আমাদের মুক্তিবাহিনী দরকার হবে। তাই মুক্তিবাহিনী গঠন করতে হবে। এবারের লড়াই হবে সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ ও একচেটিয়া পুঁজিবাদীদের উৎখাতের লড়াই। এ লড়াই হবে জনগণের লড়াই। তাই দুষ্কৃতকারী, দাঙ্গা ও লুটতরাজের বিরুদ্ধে এক সাথে দাঁড়াতে হবে। ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এক বিবৃতিতে বলেন, এই স্বাধীকার সংগ্রাম, জনতার সংগ্রাম। এই সংগ্রামে আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত। এখন যা দরকার তাহল ঐক্যবদ্ধভাবে দুর্বার গণআন্দোলন আরো জোরদার করা।বিজ্ঞাপন ন্যাপ প্রধান মওলানাা ভাসানী বলেন, দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে অনেক রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের মাধ্যমে দেশ আজ যে অবস্থায় এসে পৌঁছেছে, এই মুহূর্তে দলমত নির্বিশেষে সকল প্রকার সঙ্কীর্ণতা ও নেতৃত্বের কোন্দল ভুলে স্বাধিকার সংগ্রামে কাতারবন্দী হওয়া প্রয়োজন। যে কোনো ব্যক্তি বা দলের সাথে আমি ও আমার দল এক কাতারে সংগ্রাম করতে প্রস্তুত। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার তিন আসামি স্টুয়ার্ড মুজিবুর রহমান, এসএম সুলতান উদ্দিন এবং এল. এম নূর মোহাম্মদ এক যুক্ত বিবৃতিতে বাংলার স্বাধিকার আদায়ের চূড়ান্ত সংগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতকে শক্তিশালী করার জন্য দলমত নির্বিশেষে বাঙালিদের প্রতি আবেদন জানান। আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয় পূর্ববাংলা শ্রমিক ফেডারেশন, শ্রমিক লীগ, শ্রমিক ফেডারেশন, মজদুর ফেডারেশন, নিখিল পাকিস্তান মহিলা সমিতি, সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতি, মহিলা সংসদ, পান রফতানি সমিতি, গণমুক্তি দল ও চলচিত্র সমাজসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন। বাংলার ৫৫ হাজার বর্গমাইলে জনতার উত্তাল তরঙ্গে ভীত হয়ে সুর নরম করে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী। আত্মপক্ষ সমর্থন করে পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) মুখপাত্র আবদুল হাফিজ পীরজাদা ইয়াহিয়া ও ভুট্টোর মধ্যকার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের বলেন, ‘জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্বল্পকালীন স্থগিত ঘোষণার জন্য পিপিপি অনুরোধ জানিয়েছিল এ কথা ঠিক। তবে ইচ্ছা ছিল এই সময়ের মধ্যে ছয় দফা প্রশ্নে আলাপ-আলোচনা করে একটা সমঝোতায় পৌঁছা যাবে। তিনি বলেন, অধিবেশন স্থগিত ঘোষণার অর্থ অধিবেশন বাতিল বা অন্য কিছু নয়। এটা সামান্য সময়ের বিলম্ব মাত্র। কিন্তু এর ফলে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তার কল্পনাও আমরা করিনি। আমরা এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী নই। আওয়ামী লীগ যে ভূমিকা গ্রহণ করেছে তা ঠিক হয়নি। দেশের পরিস্থিতি যদি আরো খারাপ হয়, তবে যারা এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে তাদের ওপরেই সম্পূর্ণ দায়-দায়িত্ব পড়বে। সারাবাংলা/এজেড/টিএম আরও পড়ুন : ৪ মার্চ ১৯৭১: ইয়াহিয়া-ভুট্টো নয়, শেখ মুজিবের শাসন বিজ্ঞাপন3Shares বিজ্ঞাপনবিজ্ঞাপন সর্বশেষসর্বাধিক পঠিত দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল, পুলিশের বাধাসিরাজগঞ্জে কাভার্ডভ্যান চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহতচট্টগ্রামে মাদরাসার ভেতর শিক্ষার্থীর গলাকাটা লাশইউক্রেনের ২ শহরে সাময়িক যুদ্ধবিরতি‘সরকার পতনের জন্য’ নতুন রাজনৈতিক জোট হচ্ছেন্যাটোর সমালোচনা করলেন জেলেনস্কিএখন বিভক্তির সময় নয়— রুশদের উদ্দেশে ক্রেমলিনের বার্তাঢাকা মেডিকেলে জোড়া শিশু ভর্তিনিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের বাজারে ঢোকাই দায়ভিটে হারানোর বেদনার সঙ্গী অনিশ্চিত ভবিষ্যৎসব খবর…https://3fa0b4720ece6b6e16d9dd374b68ad5a.safeframe.googlesyndication.com/safeframe/1-0-38/html/container.htmlবিজ্ঞাপনhttps://www.facebook.com/v6.0/plugins/page.php?adapt_container_width=true&app_id=519226515539077&channel=https%3A%2F%2Fstaticxx.facebook.com%2Fx%2Fconnect%2Fxd_arbiter%2F%3Fversion%3D46%23cb%3Df29d6a35b1b06b%26domain%3Dsarabangla.net%26is_canvas%3Dfalse%26origin%3Dhttps%253A%252F%252Fsarabangla.net%252Ff1aae9535f9d6f%26relation%3Dparent.parent&container_width=340&hide_cover=false&href=https%3A%2F%2Fwww.facebook.com%2FSarabangla.net&locale=bn_IN&sdk=joey&show_facepile=true&small_header=falseবিজ্ঞাপন পেরুতে ১২০০ বছর আগে বলি দেওয়া ২০ মানব দেহাবশেষের সন্ধান ভালোবাসার রঙ মিশেছে বসন্তে এইডসে আক্রান্ত নারীর সন্তান ধারণে ঝুঁকি বেশি পঞ্চাশের বাংলাদেশ: নারী স্বত্ত্বা ও স্বাধীনতা https://googleads.g.doubleclick.net/pagead/ads?client=ca-pub-3893318578529384&output=html&h=1346&slotname=3484991230&adk=4109536830&adf=3403576509&pi=t.ma~as.3484991230&w=363&cr_col=1&cr_row=12&fwrn=2&lmt=1646468464&rafmt=9&psa=1&format=363×1346&url=https%3A%2F%2Fsarabangla.net%2Fpost%2Fsb-43335%2F&flash=0&crui=mobile_banner_image_sidebyside&fwr=0&wgl=1&uach=WyJBbmRyb2lkIiwiMTEiLCIiLCJNMjAwM0oxNVNDIiwiOTQuMC40NjA2Ljg1IixbXSxudWxsLG51bGwsIiJd&dt=1646468463056&bpp=12&bdt=1614&idt=1084&shv=r20220302&mjsv=m202203020201&ptt=9&saldr=aa&abxe=1&cookie=ID%3D0beead726cd189ee-22526cbdd0d000a5%3AT%3D1641201990%3ART%3D1646467748%3AS%3DALNI_MaQ1Emq9HQKIj70iKZSGIAg1evVsQ&prev_fmts=0x0&nras=1&correlator=250626608153&frm=20&pv=1&ga_vid=1769544829.1636624849&ga_sid=1646468464&ga_hid=1091250884&ga_fc=1&u_tz=360&u_his=1&u_h=851&u_w=393&u_ah=851&u_aw=393&u_cd=24&u_sd=2.75&dmc=4&adx=15&ady=5057&biw=393&bih=664&scr_x=0&scr_y=464&eid=31065312%2C42531397%2C44750774%2C31065368%2C31065460%2C31061690%2C31063246%2C31065516&oid=2&pvsid=2578245114988476&pem=361&tmod=2080622785&uas=0&nvt=3&ref=https%3A%2F%2Fwww.google.com%2F&eae=0&fc=1920&brdim=0%2C0%2C0%2C0%2C393%2C0%2C393%2C664%2C393%2C664&vis=1&rsz=%7C%7CoeEbr%7C&abl=CS&pfx=0&fu=128&bc=31&ifi=2&uci=a!2&btvi=1&fsb=1&xpc=LH0yjJMa9c&p=https%3A//sarabangla.net&dtd=1120 Sarabangla.net is a multimedia platform for news, views and entertainment from Bangladesh. We are committed to bringing a futuristic approach to journalism through writing, making and display. Sarabangla.net delivers the latest breaking news and top stories across politics, business, entertainment, sport, innovation, travel, food, life and others. প্রকাশক:বদরুল আলম খান কর্পোরেট ও সম্পাদকীয় অফিস:৩৭/২ গাজী গোলাম দস্তগীর সড়ক, ঢাকা – ১০০০ সংবাদ কক্ষ:২৫ সেগুনবাগিচা, ঢাকা – ১০০০ ২০১৭ সারাবাংলা.নেট সকল অধিকার সংরক্ষিত।About UsContact Us ঢাকা: ৫ মার্চ ১৯৭১। মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি পর্বের শেষ ধাপে বাংলাদেশ। এরই মধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, সিলেটসহ সারা দেশে নিরস্ত্র মানুষের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে গোটা দেশকে রক্তে রঞ্জিত করে পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী। গণহত্যার প্রতিবাদে মুখর হয়ে ওঠে সমগ্র বাঙালি জাতি। শহরে-বন্দরে, গ্রামে-গঞ্জে, শ্রমিক, কৃষক, ছাত্র-জনতা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। শাসকগোষ্ঠী এই আন্দোলন দমন করার জন্য সর্বত্র পশুশক্তির আশ্রয় নেয়। কেবল ঢাকা শহরেই শত শত মানুষের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়। বর্বরোচিত পন্থায় নিরীহ জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে গণহত্যার মাধ্যমে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে ইয়াহিয়া-ভুট্টো। বিজ্ঞাপনআওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ ৫ মার্চ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ আজ ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, সিলেট ও বাংলাদেশের অন্যান্য স্থানে নিরস্ত্র জনতাকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে আমি তার তীব্র নিন্দা জানাই। তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর এই নির্যাতনমূলক কাজের নিন্দা করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। অথচ আমরা জানি বিদেশি হামলা থেকে দেশকে রক্ষার জন্যই এই সব অস্ত্র ব্যবহৃত হবার কথা। পশ্চিম পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তাজউদ্দীন বলেন, নির্বাচতি জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি বিভিন্ন মহল থেকে উঠেছে। এই সময় পশ্চিম পাকিস্তানের সাধারণ মানুষেরও উচিত বাংলাদেশের নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের ওপর গণহত্যা বন্ধের দাবি তোলা।পূর্ব পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ওয়ালী গ্রুপ) সভাপতি মোজাফ্ফর আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আলতাফ হোসেন যুক্ত বিবৃতিতে অভিযোগ করেন, ‘পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়াশীল শাসকগোষ্ঠী দেশে গণতন্ত্র বিকাশের পথ রুদ্ধ করেছে। জাতীয় পরিষদের অধিবেশন বাতিল করেছে। শান্তিপূর্ণভাবে গণ-প্রতিনিধিদের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর অস্বীকার করেছে। বাংলার জনগণের স্বাধিকার প্রতিষ্ঠা, অর্থনৈতিক মুক্তি প্রভৃতি দাবিকে নস্যাৎ করার জন্য নানা রকম হীন ষড়যন্ত্র ও যাবতীয় নির্যাতনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এরই প্রতিবাদে শহরে-বন্দরে, গ্রামে-গঞ্জে, শ্রমিক, কৃষক, ছাত্র-জনতা, বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে। শাসক গোষ্ঠী এই আন্দোলন দমন করার জন্য সর্বত্র পশুশক্তির আশ্রয় গ্রহণ করেছে। কেবল ঢাকা শহরেই শত শত মানুষের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়েছে। তারা এ দেশে সর্বত্র একই বর্বরোচিত পন্থায় নিরীহ জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে এবং গণহত্যা করে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে। এহেন গণহত্যা চলতে থাকলে জনগণের পক্ষে পরিবেশ শান্ত রাখা সম্ভব হবে না। ফলে কোনো মারাত্মক পরিস্থিতির উদ্ভব হলে শাসকগোষ্ঠীকেই দায়ী হতে হবে।পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন (মতিয়া গ্রুপ) আয়োজিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের জনসভায় মতিয়া চৌধুরী বলেন, বাংলার স্বাধীনতা আন্দোলনের সংগ্রামকে সার্থক করার জন্য মুক্তিবাহিনী গঠন করতে হবে। সরকার যদি মনে করেন রক্ত নিয়ে বাঙালিকে দমন করা যাবে, তাহলে ভুল করেছেন। ঘটনা যাই ঘটুক, বাংলার বুকে স্বাধিকারের যে পতাকা আজ উড়ছে, তা নামানো যাবে না।লড়াইয়ের চরিত্র সম্পর্কে তিনি বলেন, কারফিউ উঠলে নতুন পর্যায়ে সংগ্রাম শুরু হবে। যে সংগ্রামকে সার্থক করার জন্য আমাদের মুক্তিবাহিনী দরকার হবে। তাই মুক্তিবাহিনী গঠন করতে হবে। এবারের লড়াই হবে সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ ও একচেটিয়া পুঁজিবাদীদের উৎখাতের লড়াই। এ লড়াই হবে জনগণের লড়াই। তাই দুষ্কৃতকারী, দাঙ্গা ও লুটতরাজের বিরুদ্ধে এক সাথে দাঁড়াতে হবে।ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এক বিবৃতিতে বলেন, এই স্বাধীকার সংগ্রাম, জনতার সংগ্রাম। এই সংগ্রামে আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত। এখন যা দরকার তাহল ঐক্যবদ্ধভাবে দুর্বার গণআন্দোলন আরো জোরদার করা।ন্যাপ প্রধান মওলানাা ভাসানী বলেন, দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে অনেক রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের মাধ্যমে দেশ আজ যে অবস্থায় এসে পৌঁছেছে, এই মুহূর্তে দলমত নির্বিশেষে সকল প্রকার সঙ্কীর্ণতা ও নেতৃত্বের কোন্দল ভুলে স্বাধিকার সংগ্রামে কাতারবন্দী হওয়া প্রয়োজন। যে কোনো ব্যক্তি বা দলের সাথে আমি ও আমার দল এক কাতারে সংগ্রাম করতে প্রস্তুত। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার তিন আসামি স্টুয়ার্ড মুজিবুর রহমান, এসএম সুলতান উদ্দিন এবং এল. এম নূর মোহাম্মদ এক যুক্ত বিবৃতিতে বাংলার স্বাধিকার আদায়ের চূড়ান্ত সংগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতকে শক্তিশালী করার জন্য দলমত নির্বিশেষে বাঙালিদের প্রতি আবেদন জানান।আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয় পূর্ববাংলা শ্রমিক ফেডারেশন, শ্রমিক লীগ, শ্রমিক ফেডারেশন, মজদুর ফেডারেশন, নিখিল পাকিস্তান মহিলা সমিতি, সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতি, মহিলা সংসদ, পান রফতানি সমিতি, গণমুক্তি দল ও চলচিত্র সমাজসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন।বাংলার ৫৫ হাজার বর্গমাইলে জনতার উত্তাল তরঙ্গে ভীত হয়ে সুর নরম করে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী। আত্মপক্ষ সমর্থন করে পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) মুখপাত্র আবদুল হাফিজ পীরজাদা ইয়াহিয়া ও ভুট্টোর মধ্যকার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের বলেন, ‘জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্বল্পকালীন স্থগিত ঘোষণার জন্য পিপিপি অনুরোধ জানিয়েছিল এ কথা ঠিক। তবে ইচ্ছা ছিল এই সময়ের মধ্যে ছয় দফা প্রশ্নে আলাপ-আলোচনা করে একটা সমঝোতায় পৌঁছা যাবে।তিনি বলেন, অধিবেশন স্থগিত ঘোষণার অর্থ অধিবেশন বাতিল বা অন্য কিছু নয়। এটা সামান্য সময়ের বিলম্ব মাত্র। কিন্তু এর ফলে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তার কল্পনাও আমরা করিনি। আমরা এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী নই। আওয়ামী লীগ যে ভূমিকা গ্রহণ করেছে তা ঠিক হয়নি। দেশের পরিস্থিতি যদি আরো খারাপ হয়, তবে যারা এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে তাদের ওপরেই সম্পূর্ণ দায়-দায়িত্ব পড়বে। Related posts:বিজয়নগরের হরষপুরে আপত্তিকর অবস্থায় স্কুল শিক্ষিকা, এলাকায় তোলপাড়সংগ্রহ গড়েও হারলো বাংলাদেশ Post Views: ১২৯ SHARES Uncategorized বিষয়: