বীর মুক্তিযুদ্ধা এ টি আহমেদুল হক চৌধুরীর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারন বিজয়নগর বিজয়নগর নিউজ প্রকাশিত: ১১:৫৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১, ২০২২ মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত ভারতের এিপুরা রাজ্যর আগরতলা ঘুড়ে এলেন ব্রাহ্মনবাড়ীয়া জেলার বিজয়নগর কৃতি সন্তান ১৯৭১ মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানী তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন মেনন গ্রুপের অন্যতম সদস্য বাংলাদেশ পুলিশ এর সাবেক আই জি পি ও পিএসসি সাবেক চেয়ারম্যান্যন এ টি আহমেদুল হক চৌধুরীর ফেইজ বুকে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারন করেন নতুন প্রজন্মের সন্তানদের জন্য মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানার জন্য্য তুলে ধরা হল পঞ্চাশ বছর পর আগষ্টের শেষ সপ্তাহে সস্ত্রীক ত্রিপুরা ঘুরে বেড়িয়েছি। মুক্তিযুদ্ধের প্রথম দিকের দিনগুলোর কথা মনে এলে বিশেষ ভাবে মনে পড়ে ত্রিপুরার সীমান্তে ২৮ মার্চ’৭১ তারিখে বি,এস,এফ এর হাতে আটক হওয়ার অনাকাঙ্খিত ঘটনাটি। ২৫ মার্চ পাকিস্তান বাহিনীর বর্বর আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধের জন্য অস্ত্র সংগ্রহের লক্ষ্যে ত্রিপুরার নক্সাল নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ করার উদ্দেশ্যে আমি( ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এম,বি,এ এর ছাত্র),নির্মলেন্দু সেন গুপ্ত (বাদল সেন/ বাদল দা’/হাই স্কুল শিক্ষক), হেফজুল বারী সরকার (কলেজ ছাত্র/ ছাত্র লীগ নেতা) এবং গাইড ধীরেন্দ্র কপালী ২৮ মার্চ বাড়ি (সাতগাঁও/ বিজয়নগর) থেকে দুপুরে পায়ে হেঁটে ত্রিপুরার বামুটিয়া সীমান্তে পৌছার সাথে সাথে বি, এস,এফ এর তিন জন সৈনিকের হাতে ধরা পড়ি। বি,এস,এফ সৈনিকদের কে বাংলাদেশের ( পূর্ব পাকিস্তানের) নারকীয় পরিস্থিতি বুঝানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হলাম। তারা আমাদের কে ভারতীয় নক্সাল বলে সন্দেহ করে বামুটিয়া ক্যাম্পে নিয়ে যায়।ইতোমধ্যে আমাদের আটকের খবর শুনে স্থানীয় বামফ্রন্টের নেতৃবৃন্দ ক্যাম্পে আসেন।তাদের কেউ কেউ বাদল সেনের পূর্ব পরিচিত ছিলেন। আমার সাথে ইংরেজিতে লেখা একটি টেলিগ্রামের ড্রাফট ছিল, পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর বর্বরতার তথ্য ও তা’ বন্ধ করার জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী, জাতিসংঘ ও কমনওয়েল্থ কে টেলিগ্রাম পাঠানোর জন্য ভারতে এসেছি বলে জালালাম। নেতৃবৃন্দ বিশ্বাস করলেন এবং ক্যাম্পের সুবেদারকে আমাদের ছেড়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ করলেন। কিন্ত বিষয়টি ততক্ষনে বি,এস,এফ এর উপর মহলে জানাজানি হওয়ায় আমাদেরকে আগরতলা সেক্টর সদরে নিয়ে যাওয়া হলো, তবে ধীরেন্দ্রকে বামুটিয়া ক্যাম্পে রেখে দিল। পরদিন সকাল দশটায় সেক্টরের এক কর্মকর্তা (সম্ভবত দ্বিতীয় ব্যাক্তি) এর কাছে নিয়ে যাওয়া হয় ।তিনি মনযোগ সহকারে আমাদের সব কথা শুনে টেলিগ্রামের খসড়াটি রেখে দিলেন ও পাঠিয়ে দেবেন বলে আমাদেরকে দেশে ফিরে যেতে বলেন। আমার এখনও মনে পড়ে, আমি এবং বাদল সেন দুজনেই বিষয়টি ভালভাবেই ইংরেজিতে ব্যাক্ত করেছিলাম। বের হয়েই বামুটিয়ার একজন নেতা এবং একজন সাংবাদিক কে দেখতে পাই, নাম গোপন করে সাংবাদিক কে পরিস্থিতির কথা জানালাম। সেখান থেকে বাম নেতার (এই মুহূর্তে নাম মনে আসছে না) সাথে বামুটিয়া ফিরে এসে ঐ নেতার বাড়িতে আশ্রয় গ্রহণ করি। রাতে দুজন নক্সাল কর্মীর কাছ থেকে আট টি হাতে তৈরি বোমা ও কমরেড চারু মজুমদারের লেখা নির্দেশনা সংক্রান্ত একটি বই হাতে পাই। পরদিন (৩০ মার্চ) সন্ধ্যার কিছু পরে গাইড ধীরেন্দ্রের সাহায্যে বাড়ি ফিরে আসি। আমাদের আটক হওয়ার খবর পরদিনই বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছিল বলে সবাই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিল। বস্তুত এই বোমাগুলো কোন কাজে আসেনি। এরপর আরো কিছুদিন আগরতলা আসা যাওয়া করে একসময় ট্রেনিং নেয়ার জন্য আমরা দেরাদূনের টান্ডুয়া চলে যাই। আমি এবং বাদল দা’ ঘটনার সাক্ষী হয়ে এখনও বেঁচে আছি, হেফজু ও ধীরেন্দ্র আমাদের ছেড়ে চলে গেছে। Related posts:শাহিদ মিয়ার মৃত্যুতে মুক্তাদির চৌধুরী এম পি র শোক প্রকাশবিজয়নগরে তালগাছ রোপণ Post Views: ১৪১ SHARES Uncategorized বিষয়: