তাহেরি বললেন ‘ভালবাসি’, ওয়াজ মাহফিলে প্রার্থী চাইলেন নৌকায় ভোট

প্রকাশিত: ১১:১২ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২২, ২০২৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচন আগামী ৫ নভেম্বর। তফসিল অনুযায়ী প্রার্থীরা প্রতীক বরাদ্দ পাবেন আগামী ২০ অক্টোবর। কিন্তু এর আগেই আচরণবিধি ভঙ্গ করে রাতদিন সভা সমাবেশ নৌকা প্রতীকে ভোট চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজুর বিরুদ্ধে। এছাড়াও বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে অংশ নিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন তিনি। সর্বশেষ রোববার (১৫ অক্টোবর) গভীর রাতে আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুরে মুফতি গিয়াস উদ্দিন তাহেরির একটি ধর্মীয় মাহফিলে তিনি অংশগ্রহণ করে মাইকে ভোট প্রার্থনা করেন। সেই মাহফিলের বক্তব্যের ভিডিও তিনি তার ফেসবুক আইডিতে শেয়ার দিয়েছেন।

এসময় শাহজাহান আলম সাজু বলেন, ‘আশুগঞ্জের মানুষ কোন দিন নৌকা প্রতীক পায়নি। এবার জননেত্রী শেখ হাসিনা নৌকা প্রতীক দিয়েছেন। আশা করবো আগামী ৫ নভেম্বর নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার  হাতকে শক্তিশালী করবেন

মাহফিলে মুফতি গিয়াস উদ্দিন তাহেরি বলেন, ‘আমি সাজু ভাইকে ভালবাসি, আপনারা ভালবাসবেন। আমার পরিবারও সাজু ভাইয়ের জন্য দোয়া করে।  আপনাদের সন্তান আমার ভাইয়ের জন্যে দোয়া করবেন। আল্লাহ যেন ভাইকে কবুল করেন।’

এর একদিন আগে উপজেলার নাওঘাট এলাকায় একটি মাহফিলে অংশ নিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন।

গত ১২ অক্টোবর মনোনয়ন বাছাই শেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক ও উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহগীর আলম সকল প্রার্থীর উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, আগামী ২০ অক্টোবর প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। এর আগে যেন কোন প্রার্থী প্রচারণা না করেন।

কিন্তু রিটার্নিং কর্মকর্তার এমন নির্দেশনার পরও সেদিনই আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শাহজাহান আলম সাজু সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়ন পরিষদ মিলনায়তন ব্যবহার করে নির্বাচনী সভা করেন। ওই সভা শেষে তিনি পাকশিমুলে একটি সভা করেন। এর পর থেকে তিনি বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক সভা করেই যাচ্ছেন।

এই বিষয়ে জানতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (আশুগঞ্জ-সরাইল) আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজুর মুঠোফোনে সোমবার একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

তবে জাতীয়পার্টি মনোনীত প্রার্থী আব্দুল হামিদ বলেন, উনার কর্মকাণ্ড গুলো আমার নজরে এসেছে। প্রতীক বরাদ্দের আগে এভাবে ভোট প্রার্থনা আচরণবিধির লঙ্ঘন। আমরা এগুলো দেখছি, অভিযোগ দাখিল করা হবে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি জিয়াউল হক মৃধা বলেন, আগামী ২০ অক্টোবর প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। এরআগে প্রকাশ্যে এভাবে ভোট চাওয়া ঠিক নয়।

এই বিষয়ে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শ্যামল কুমার বসাক বলেন,প্রতীক বরাদ্দের আগে নির্বাচনী প্রচারণার সুযোগ নেই। আমরা অবহিত হওয়ার সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।  ওয়াজ মাহফিলের অংশ নিয়ে ভোট প্রার্থনার বিষয়টি আমি অবগত নই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বহুল আলোচিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) সংসদীয় আসনের এমপি উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞা গত ৩০ সেপ্টেম্বর ইন্তেকাল করেছেন। তার মৃত্যুতে গত ৪ অক্টোবর আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচনের তফসিল দেয় বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন।

মনোনয়ন বাছাই প্রক্রিয়া শেষে ৬ জন প্রার্থীর মধ্যে ৫জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। তারা হলেন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী মো. রাজ্জাক হোসেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা, জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম (জুয়েল), বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শাহজাহান আলম, জাতীয়পার্টির আব্দুল হামিদ। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী ইব্রাহীমের মনোনয়ন বাছাইয়ে অবৈধ ঘোষণা করা হয়।