সংগ্রাম ও ঐতিহ্যের মহান শিক্ষা দিবস ১৭ সেপ্টেম্বর আমরা ভূলে গেছি বিজয়নগর বিজয়নগর নিউজ প্রকাশিত: ৪:৩৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৩ মৃনাল চৌধুরী লিটন শত ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতাই উপমহাদেশের ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মশতবার্ষিকী পালনকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাধার সৃষ্টি করা হলে তৎকালীন সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসমাজ সরকারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেআজকে যখন দেখি এদেশে অনেকগুলি ছাত্র সংগঠন ক্রিয়াশীল থাকার পরও ঐতিহাসিক শিক্ষা দিবস বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় পালিত হয় না তখন ছাত্র আন্দোলনের একজন সাবেক কর্মী হিসেবে ভাবতে নিজেকে খুব লজ্জিত মনে হয় আজকে ছাত্র রাজনীতিতে যখন অতীতের সকল ঐতিহ্য সকল সফলতা ভুলে গিয়ে নিজেদের কে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ব্যস্ত তখনই সাধারণ ছাত্র ছাত্রীরা ছাত্র রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় ছাত্র রাজনীতির প্রতি তাদের ঘৃণা সৃষ্টি হয় এবং ছাত্র রাজনীতিকে মনে করে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য তাই আজকের ছাত্র রাজনীতিকে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে নিয়ে যেতে হলে ছাত্র রাজনীতির অতীত ইতিহাস লালন করতে হবে ১৯৬২ সালের ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সিরাজুল আলম খান শেখ ফজলুল হক মনি রাশেদ খান মেনন হায়দার আকবর খান রন কাজী জাফর আহমেদ আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া মত জাতীয় নেতারা সৃষ্টি হয়েছে এবং তারা সকলেই ছিলেন ছাত্র রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে আজকের দিনেও তাদের ছাত্র রাজনীতি নিয়ে তাদের সহকর্মীরা গর্ববোধ করে কিন্তু দুর্ভাগ্য সঠিক চর্চার অভাবে আজকের ছাত্র রাজনীতি হারিয়ে যেতে বসেছে তাই ছাত্র রাজনৈতিক সঠিক ভাড়া ফিরিয়ে আনতে এবং ছাত্র সমাজকে ছাত্র আজ নিজে সম্পৃক্ত করতে নিজেদেরকে সঠিক ইতিহাস চর্চা ও লালন করতে হবে তাহলেই ছাত্র রাজনীতির অতীত ইতিহাস আমাদের মাঝে ফিরে আসবে সংগ্রাম ও ঐতিহ্যের মহান শিক্ষা দিবস ১৭ সেপ্টেম্বর। ১৯৬২ সালের এই দিনে পাকিস্তানি শাসন, শোষণ ও শিক্ষা সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে শহীদ হন ওয়াজিউল্লাহ, গোলাম মোস্তফা, বাবুলসহ নাম না-জানা অনেকেই। তাদের স্মরণে এই দিনকে শিক্ষা দিবস হিসেবে পালন করা হয়।স্বৈরশাসক আইয়ুব খান ক্ষমতা দখলের মাত্র ২ মাস পর ১৯৫৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করেন।[২][৩] শরীফ কমিশন নামে খ্যাত এসএম শরীফের নেতৃত্বে গঠিত এই কমিশন ১৯৫৯ সালের ২৬ আগস্ট তাদের প্রতিবেদন পেশ করে। এতে শিক্ষা বিষয়ে যেসব প্রস্তাবনা ছিল তা প্রকারান্তরে শিক্ষা সংকোচনের পক্ষে গিয়েছিল। প্রস্তাবিত প্রতিবেদনে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা ক্ষেত্রে ছাত্র বেতন বর্ধিত করার প্রস্তাব ছিল। ২৭ অধ্যায়ে বিভক্ত শরীফ কমিশনের ওই প্রতিবেদনে প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চতর স্তর পর্যন্ত সাধারণ, পেশামূলক শিক্ষা, শিক্ষক প্রসঙ্গ, শিক্ষার মাধ্যম, পাঠ্যপুস্তক, হরফ সমস্যা, প্রশাসন, অর্থবরাদ্দ, শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বিষয়ে বিস্তারিত সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়। আইয়ুব সরকার এই রিপোর্টের সুপারিশ গ্রহণ এবং তা ১৯৬২ সাল থেকে বাস্তবায়ন করতে শুরু করে। শরীফ কমিশনের শিক্ষা সংকোচন নীতি কাঠামোতে শিক্ষাকে তিন স্তরে ভাগ করা হয়- প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চতর। ৫ বছরে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও ৩ বছরে উচ্চতর ডিগ্রি কোর্স এবং ২ বছরের স্নাতকোত্তর কোর্সের ব্যবস্থা থাকবে বলে প্রস্তাব করা হয়। উচ্চশিক্ষা ধনিকশ্রেণীর জন্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এজন্য পাস নম্বর ধরা হয় শতকরা ৫০, দ্বিতীয় বিভাগ শতকরা ৬০ এবং প্রথম বিভাগ শতকরা ৭০ নম্বর। এই কমিশন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বায়ত্তশাসনের পরিবর্তে পূর্ণ সরকারি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা, বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, ছাত্র-শিক্ষকদের কার্যকলাপের ওপর তীক্ষ্ণ নজর রাখার প্রস্তাব করে। শিক্ষকদের কঠোর পরিশ্রম করাতে ১৫ ঘণ্টা কাজের বিধান রাখা হয়েছিল। রিপোর্টের শেষ পর্যায়ে বর্ণমালা সংস্কারেরও প্রস্তাব ছিল। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন আইয়ুবের এই শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্ব স্ব দাবির ভিত্তিতে জুলাই-আগস্ট মাস জুড়ে আন্দোলন চলতে থাকে। এ আন্দোলন কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে ১৭ সেপ্টেম্বর দেশব্যাপী হরতাল কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয়া হয়। ওই দিন সকাল ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজার হাজার মানুষ সমাবেশে উপস্থিত হন। সমাবেশ শেষে মিছিল বের হয়। জগন্নাথ কলেজে গুলি হয়েছে- এ গুজব শুনে মিছিল দ্রুত নবাবপুরের দিকে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু হাইকোর্টের সামনে পুলিশ এতে বাধা দেয়। তবে মিছিলকারীরা সংঘাতে না গিয়ে আবদুল গনি রোডে অগ্রসর হয়। তখন পুলিশ মিছিলের পেছন থেকে লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস ও গুলিবর্ষণ করে। এতে তিনজন নিহত হয়। ওই দিন সারাদেশে মিছিলে পুলিশ গুলি করে। টঙ্গীতে ছাত্র-শ্রমিক মিছিলে পুলিশের গুলিতে সুন্দর আলী নামে এক শ্রমিকেরও হত্যার খবর পাওয়া যায় ।১৭ সেপ্টেম্বর দেশব্যাপী হরতাল কর্মসূচির পরে সারা দেশে জোর প্রতিক্রিয়া ঘটে। স্বৈরশাসক আইউব খানের রোষানলে পড়েন ছাত্র ও যুব নেতৃবৃন্দ। ১৯৬৪ সালে হুলিয়া জারি হয় ছাত্রলীগ ও ছাত্র ইউনিয়নের নয়জন ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে। তারা হলেন সিরাজুল আলম খান, রাশেদ খান মেনন, হায়দার আকবর খান রনো, কেএম ওবায়দুর রহমান, বদরুল হায়দার চৌধুরী, শাহ মোয়াজ্জেম, রেজা আলী, গিয়াস কামাল চৌধুরী এবং আইউব রেজা চৌধুরীদিবসটি উপলক্ষে গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন আজ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে গণ ছাত্র সমাবেশ শিক্ষা অধিকার চত্বরে শিক্ষা আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনা সভা ও মিছিল। Related posts:কোরবানির পশুর চামড়া মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদের নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠানে দান করবেন না’শহীদ নূর হোসেন দিবস আজসকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে মিসেস নায়ার কবিরই নৌকার মাঝি Post Views: ১০৪ SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: