আখাউড়ায় ডায়াগনস্টিক সেন্টারে হামলার প্রতিবাদে কর্মবিরতি ও মানববন্ধন

প্রকাশিত: ৯:৩৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৬, ২০২৩

আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
ডাক্তারের ফি চাওয়াকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় ডায়াগনস্টিক সেন্টারে হামলা, মারধর ও ভাংচুরের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও কর্মবিরতি পালন করা হয়েছে। আখাউড়াস্থ বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক সমিতির উদ্যোগে রোববার বেলা ২টার দিকে পৌরশহরের রাধানগর মোড়ে মানববন্ধন কর্মসূচি এবং বেলা ২টা থেকে ৪ টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করা হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে হামলা, ভাংচুরের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। পাশাপাশি এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের নিকট দাবী জানানো হয়। এর আগে গত ২৮ জুলাই বিকালে পৌরশহরের রাধানগরস্থ দি কর্মফোট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় ডায়াগনিস্টিক স্টোরের মালিক, কর্মচারী ও কালের কন্ঠের জেলা প্রতিনিধি বিশ্বজিৎ পালসহ ৪ জন আহত হয়। রাতেই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক সাংবাদিক আশীষ সাহা বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে আখাউড়া থানায় মামলা দায়ের করে। পুলিশ পৌরশহরের দেবগ্রামের মাহফুজ ভুঁইয়া (৬৫) ও তার পুত্র সুমন ভুঁইয়া (৩৫) কে আটক করে। বর্তমানে মাহফুজ ভূইয়া জামিনে আছেন এবং সুমন ভূইয়া কারাগারে আছে।

মানববন্ধনে পৌরশহরের ১৪টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক ও প্রতিনিধিরা অংশ নেয়। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মোঃ রফিকুল ইসলাম, সুবল দাস, মোঃ আব্দুল আওয়াল, মোঃ বাবুল মিয়া, পরিমল সাহা, মোঃ কুদ্দুস মিয়া, মোঃ রৌশন মিয়া, মোঃ তুহিন মিয়া, জহর লাল চৌহান, মোঃ আমির, মোঃ শফিক মিয়া, অংগ্য পাল, বিশাল সাহা, পলাশ আহমেদ প্রমুখ।

ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ডায়াগনস্টিক সেন্টারে হামলা ভাংচুরের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য প্রশাসনের নিকট জোর দাবী জানাচ্ছি। অদূর ভবিষ্যতে যদি কোন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে তাহলে শুধু কর্মবিরতি নয় হয়তো এ প্রতিষ্ঠানগুলো একবারেই বন্ধ হয়ে যাবে। তখন আখাউড়ার জনগণ আমাদের মাধ্যমে যে সেবাগুলো পায় সেগুলো থেকে বঞ্চিত হবে।

ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক সাংবাদিক আশীষ সাহা বলেন, ডাক্তারের ফি চাওয়ায় প্রথমে আমাকে এবং আমার প্রতিষ্ঠানের কমীর্কে লাঞ্চিত করে। পরে লোকজন নিয়ে এসে আবারও হামলা করে। আমি প্রশাসনের নিকট ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবী জানাচ্ছি।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মোঃ রফিকুল ইসলাম সেলিম, মোঃ আব্দুল আওয়াল প্রমুখ।
জানা যায়, ২৮ জুলাই (শুক্রবার) বেলা সাড়ে পাঁচটার দিকে সুমন ভূঁইয়া স্ত্রীসহ তার শিশু সন্তানকে নিয়ে চিকিৎসক দেখাতে ওই ক্লিনিকে যায়। এসময় ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কমীর্ সালমা আক্তার সুমনের কাছে চিকিৎসকের ফি চায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সুমন সালমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এসময় ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক সাংবাদিক আশিষ সাহা এগিয়ে এলে তাকে ধাক্কা মেরে গালমন্দ করে সুমন। এক পর্যায়ে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে যান সুমন। খবর পেয়ে বিকেল ৬টার দিকে ওই সেন্টারের যান বাড়ির মালিক ও সাংবাদিক বিশ্বজিৎ পাল বাবু। এর কিছুক্ষণ পরে সুমন ১০—১৫ জন লোক নিয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এসে নারী কর্মীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তখন সাংবাদিক বিশ্বজিৎ পাল প্রতিবাদ করলে তাকে মারধর করে সুমন ও তার সহযোগিরা। এসময় সাংবাদিক বিশ্বজিৎকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে শান্ত পাল ও আনন্দ পাল নামে আরও দুজনকে মারধর করে। পরে এলাকার লোকজন এগিয়ে এলে তারা চলে যায়।