ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাইওয়ে ওসির বিরুদ্ধে অবৈধ সিএনজি বানিজ্যের অভিযোগ

প্রকাশিত: ৬:৩০ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৬, ২০২৩

সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি: হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা রিজিয়নের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ আকুল চন্দ্র বিশ্বাসকে ৪ শতাধিক সিএনজি ট্রাক্টর মালিক ও চালকরা নিয়মিত মাসিক মাসোয়ারা দিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মাসিক টাকার বিনিময়ে ঢাকা সিলেট মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সিএনজি চালিত অটোরিকশা সঙ্গে রয়েছে পিকআপ ভ্যান ও ট্রাক্টর।

সোমবার সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত বিশ্বরোড, কুট্টাপাড়া, বাড়িউড়া,শাহবাজপুর , চান্দুরা, আশুগঞ্জ বেড়তলা এলাকায় অবস্থান করে অবাধে শত শত সিএনজি, অটোরিকশা, ব্যাটারি চালিত রিকশা ও ট্রাক্টর চলাচল করতে দেখা যায়।

সরেজমিন দেখা যায়, বিশেষ স্টিকার,মোবাইল নম্বর চালকের নাম মাধ্যমে সিএনজি চলাচলের সুযোগ দেয় হাইওয়ে পুলিশ। এটা চাঁদাবাজির অন্যতম কৌশল। এমন অপকৌশলে দিনের পর দিন চালকদের কাছ থেকে হাইওয়ে পুলিশ হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। হাইওয়ে পুলিশের এমন চাঁদাবাজি বন্ধের জন্য কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন মহল।

অনুসন্ধানে জানা যায় , প্রতিটি সিএনজি থেকে ২ হাজার আর ট্রাক্টর থেকে ৩ হাজার করে মাসে কয়েক লাখ টাকার চুক্তি করে হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে হাইওয়ে থানার সামনে দিয়ে এসকল নিষিদ্ধ যানবাহন মহাসড়কে দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে। আর এই সিএনজি ও ট্রাক্টর টাকা ওসির নামে উত্তোলন করছে কথিত সাংবাদিক ও চিহ্নিত দালাল এবং সিএনজি শ্রমিক নেতা। তবে এই নিয়ে কোন সিএনজি ট্রাক্টরের মালিক ও চালকের কোন অভিযোগ নেই, তারা মাসোয়ারা দিয়ে গাড়ি চালাতে অভ্যস্থ।

হাইওয়ে পুলিশ ডিউটি নামে অভিযানে মহাসড়কে নিষিদ্ধ থ্রি হুইলার আটক করে ডাম্পিয়ে রেখে মোটা অংকের টাকা রেখে ছেড়ে দিচ্ছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কিছু গাড়ির উর্ধতন কর্মকর্তাকে বুঝানোর জন্য নাম মাত্র মামলা।

অতীতে খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানায় ওসি হিসেবে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন সে সময় মহাসড়কে থ্রীহুইলার যানবাহন চলাচল শূণ্যের কোঠায় নামিয়ে এনেছিলেন বলে জনালেন স্থানীয়রা। বিশেষ করে ওসি, শাহজালাল, ওসি সুখেন্দু বসু এর সময় মহাসড়কের এলাকায় থ্রীহুইলার যানবাহন মাঝে মধ্যে দু’একটা ছিটেফোটা দেখা গেলেও তাও হাইওয়ে পুলিশ পেলে আইনের আওতায় নিয়ে আসতো।

বর্তমান ওসি আকুল চন্দ্র বিশ্বাস খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানায় যোগদান করার পর কথিত সাংবাদিক ও হাইওয়ে থানার দালালদের নিয়ে মিটিং করে প্রতিটি নিষিদ্ধ থ্রি হুইলার যানবাহন থেকে মাসোয়ারা করে টাকার একভাগ ওসিকে আরেক ভাগ দালাল নেবে বলে ভাবে চুক্তি হয়। সেই চুক্তি পরে ঢাকা সিলেট মহাসড়কে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন এখন প্রতিদিন কমপক্ষে কয়েক হাজার সিএনজি, অটোরিকশা, ট্রাক্টর চলাচল করছে খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানা পুলিশের চোখের সামনে দিয়ে।

অভিযোগ রয়েছে, হাইওয়ে থানার ওসির নামে প্রতি মাসেই কয়েক লাখ টাকা এসব সিএনজি ও ট্রাক্টর থেকে তুলে কথিত সাংবাদিক ও চিহ্নত দালালরা। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে এসব সত্য নয় । এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যদি তাই হয় তাহলে এসব সিএনজি মাসের পর মাস কীভাবে প্রকাশ্যে ঢাকা সিলেট মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে । রহস্যজনক ভাবে এদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না ।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ময়নামতি হাইওয়ে থানায় কর্মরত ছিলেন ওসি আকুল চন্দ্র বিশ্বাস ও এএসআই মনির। এএসআই মনির ময়নামতি থানায় থাকতে বিভিন্ন কৌশলে ওসিকে টাকা ইনকাম করে দিত। যখন ওসির বদলি হয়ে খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানায় আসে, তখন ওসি কিছুদিন যেতে না যেতেই এএসআই মনিরকে পোস্টিং করে খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানায় আনে। তাঁরপর থেকে শুরু হয় হাইওয়ে ওসি দিকনির্দেশনা আর এএসআই মনিরের নেতৃত্বে থানার সোস,কথিত সাংবাদিক, চিন্হিত দালাল, সিএনজি শ্রমিক নেতাদের দিয়ে নিষিদ্ধ থ্রি হুইলার অবৈধ যানবাহন থেকে মাসোয়ারা বানিজ্য টাকা উত্তলন।

আরও জানা যায়, এএসআই মনির হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলায় বানর গ্রামের ছেলে। সেই সুবাদে বাড়ির কাছে চাকরি করে বিভিন্ন কৌশলে টাকা ইনকাম করতে পারে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিএনজি চালকের বলা কথা হুবহু তোলা, এটা ওসির গাড়ি, দুই হাজার টাকা সাম্বাদিকের মাধ্যমে মানতি করছি।

এছাড়া মূলধারার সাংবাদিকরা নিষিদ্ধ থ্রি হুইলার মহাসড়কে চলাচলের বিষয়ে বক্তব্য আনতে গেলে ওসি বিভিন্ন কৌশলে দমন করা চেষ্টা তদবিরও চলে জোড়ালোভাবে। সাংবাদিকের দেওয়া উত্তর না দিয়ে অন্য প্রসঙ্গে কথা বলে।

এ বিষয়ে জানতে খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ আকুল চন্দ্র বিশ্বাসের কাছে প্রশ্ন ছিল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাইওয়ে থানায় মোটা অংকের টাকা দিয়ে আসছেন, কিনা। দ্বিতীয় প্রশ্ন ছিল ওসি আকুল চন্দ্র বিশ্বাস ও এএসআই মনির, কুমিল্লা ময়নামতি একই থানায় চাকরি করতেন, এএসআই মনিরকে ওসি পোস্টিং করে আনার ব্যবস্থা করেছেন কিনা, ওসি আকুল চন্দ্র বিশ্বাস, বলেন এসব প্রশ্ন কোনটাই সঠিক নয়।