ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপ-নির্বাচনে ভোটের মাঠ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন জিয়াউল হক মৃধা।

প্রকাশিত: ৪:৫১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৮, ২০২৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপ-নির্বাচনে প্রতীক নিয়ে প্রচার চালিয়েও শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন দুই বারের সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা।

আওয়ামী লীগের তিন নেতার এই উপ-নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো নিয়ে নানা গুঞ্জনের মধ্যেই বুধবার সংক্ষিপ্ত বিবৃতি দিয়ে জাতীয় পার্টির সাবেক এই নেতাও সরে গেলেন।

জিয়াউল হক মৃধা ভোটের মাঠ ছাড়ার কারণ হিসেবে বিবৃতিতে যা উল্লেখ করেছেন; সেই একই কারণ দেখিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের নেতারাও।

বিবৃতির ব্যাপারে জানতে জিয়াউল হক মৃধার মোবাইল ফোনে কল করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

পরে তার ছেলে মৃধা মাহবুবে ইলাহী প্রদ্যুৎকে মোবাইল করলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিবৃতির বিষয়টি ঠিকই আছে। বাবা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।”

দলীয় সিদ্ধান্তে গত ১১ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উকিল আবদুস সাত্তারসহ বিএনপির ৭ সংসদ সদস্য পদত্যাগপত্র জমা দেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে। ছেড়ে দেওয়া এসব আসনে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

তার আগে দলীয় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদসহ বিএনপির সব ধরনের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা জানান তিনি। পরে তাকে দলীয় সব পদ ও প্রাথমিক সদস্য থেকে বহিষ্কার করে দল।

তারপর উকিল সাত্তার উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন; যা নিয়ে সরাইল ও আশুগঞ্জে নানা গুঞ্জন তৈরি হয়।তার মধ্যেই প্রতীক বরাদ্দের আগের দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন এবং স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলম সাজু একসঙ্গে ভোটের মাঠ থেকে সরে দাঁড়ানোয় সেই গুঞ্জন আরও জোর পায়।

তিন প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের ফলে নিজের ছেড়ে দেওয়া আসনের এই উপ-নির্বাচনে বিএনপির সাবেক নেতা ও বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ উকিল আব্দুস সাত্তার ভুঞা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সহজেই উৎরে যাবেন বলে ভোটাররা আলোচনা করছেন।

যদিও বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, সরকার বিএনপির সংসদ সদস্যদের পদত্যাগকে বিতর্কিত করতেই উকিল আব্দুস সাত্তারকে ভোটে দাঁড় করিয়েছে। তাকে পাশ করিয়ে আনার জন্যই আওয়ামী লীগ তিন নেতাকে ভোটের মাঠ থেকে সরিয়ে দিয়েছে।
তবে ভোটের মাঠ থেকে সরে দাঁড়ানোর কারণ হিসেবে আওয়ামী লীগ নেতা মঈন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “মানুষের যে বিপুল প্রত্যাশা, আমি যদি নির্বাচিত হইও এই আট মাসে সব আমার দ্বারা পূরণ করা সম্ভব না।”

আরেক আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু বলেছিলেন, “নির্বাচনে বিজয়ী হলেও এই অল্প সময়ে জনগণের জন্যে তেমন কাজ করতে পারবো না। তাই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছি।”

এসব ঘটনার মধ্যে বুধবার ভোটের মাঠ থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে বিবৃতিতে জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা জিয়াউল হক মৃধা বলেন, “উপনির্বাচন পরবর্তী সংসদীয় মেয়াদকাল জনগণের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য খুব সংক্ষিপ্ত সময়। … ভোটারদের যে আশ্বাস ও ওয়াদা দিয়ে ভোট প্রার্থনা করব, সংক্ষিপ্ত সময়ে সে ওয়াদা ও আশ্বাস বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত দূরূহ বলে আমি মনে করি।”

“আমি সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে উন্নয়নের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে সম্মানিত ভোটারগণের সঙ্গে প্রতারণা করতে পারি না।”