ইতিহাসের এ-ই দিনে১০ই মার্চ১৯৭১ বিজয়নগর বিজয়নগর নিউজ প্রকাশিত: ৭:০৭ অপরাহ্ণ, মার্চ ৯, ২০২২ ভাষা আন্দোলনের পথ বেয়েই বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূর্য উঠেছিল, নিজের ন্যায্য অধিকার বুঝে নিতে জেগে উঠেছিল এ দেশের মুক্তিকামী কোটি জনতা। একাত্তরের মার্চ ছিল মুক্তিকামী জনতার আন্দোলনে উত্তাল। বাংলা ছিল অগ্নিগর্ভ। ১৯৭১ এর মার্চ মাসে যত দিন যেতে থাকে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আন্দোলন সংগ্রামে উত্তাল হয়ে ওঠে ঢাকাসহ সারাদেশ। ৯ই মার্চ টিক্কা খানকে শপথ বাক্য পাঠ করাতে অস্বীকৃতি জানানোর পর পূর্ব পাকিস্তান হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি বি এ সিদ্দিকীকে হুমকি দিতে থাকে পাকিস্তানি সামরিকজান্তা। তারই ধারাবাহিকতায় ১০ই মার্চের এক পর্যায় বিচারপতি বি এ সিদ্দিকীকে গভর্নর হাউসে (বর্তমান বঙ্গভবন) আসার জন্য লোক মারফতে নির্দেশ পাঠানো হয়। কিন্তু বিচারপতি বি এ সিদ্দিকী স্পষ্ট জানিয়ে দেন এ অবস্থায় কোনো মতেই টিক্কা খানকে তার পক্ষে শপথ বাক্য পাঠ করানো সম্ভব নয়। ফলে দ্বিতীয় দিনের মত টিক্কা খানকে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর হিসাবে শপথ নেওয়ার চেষ্টা ব্যর্থ হয়। এমতাবস্থায় ইয়াহিয়া খান সামরিক বিধি সংশোধন করে টিক্কা খানকে সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করেন। এই দিনের এই ঘটনা বাংলার মুক্তিকামী জনতার আন্দোলনকে নতুনভাবে উদ্বেলিত করে। এ দিন ঢাকার রাজপথে লেখক-শিল্পী মুক্তি পরিষদ ও ছাত্ররা বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রাম জোরদার করার প্রত্যয় নিয়ে মিছিল করে। ১০ই মার্চ, ১৯৭১ আওয়ামী লীগ ঘোষণা করে “ব্যাংকের লকারগুলোর কাজ বন্ধ থাকবে” এবং শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশের বাইরে বন্দর কর্তৃপক্ষ কোনো সহযোগিতা করবেন না। এদিনে কুমিল্লার চা বাগানে গোলযোগ ও সন্ত্রাসের খবর পাওয়া যায়। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের অসহযোগ আন্দোলন অব্যাহত থাকে। ধীরে ধীরে পাকিস্তানের বেসামরিক প্রশাসন পঙ্গু হয়ে পড়তে থাকে। স্থগিত হয়ে পড়ে অফিস আদালতের কাজ। আওয়ামী লীগের আহবানে সাড়া দিয়ে মুক্তিকামী জনগণ পশ্চিম পাকিস্তানকে বকেয়া যুক্ত রাষ্ট্রীয় কর প্রদান বন্ধ করে দেয়। আওয়ামী লীগের অসহযোগ আন্দোলনের ফলে পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিম পাকিস্তানের চারটি প্রদেশে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। পাকিস্তান সেনাবাহিনী সাধারণ জনতার সাথে ভয়ে সংঘর্ষ এড়িয়ে চলে এবং ফেডারেল সরকারের নির্দেশানুযায়ী সাড়া দিয়ে সেনানিবাসেই অবস্থান করে নিজেদের সংবরণ করে রাখে। আওয়ামী লীগ পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের চারটি প্রদেশের মধ্যকার ব্যাংকিং ও বাণিজ্যিক লেনদেনে বাধা প্রদান করে এবং আন্ত:টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার অনুপস্থিতিতে শিল্প ও বাণিজ্য ব্যবস্থা পঙ্গু হয়ে যায়। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হিংস্রতা ও অনাচার ছড়িয়ে পড়ার প্রতিবেদনগুলো সমস্ত পূর্ব পাকিস্তান হতে গৃহীত হয়। অনেক জায়গায় আসামীরা জেল থেকে পালিয়ে যায়। একাত্তরের এই সময়ে বাঙ্গালির মুক্তির আকাঙ্ক্ষা ক্রমেই বাড়তে থাকে। মুক্তির আকাঙ্ক্ষায় উন্মুখ মানুষ প্রতিদিন ছুটে চলেছে তাদের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের বাড়ীতে। সকাল নেই, দুপুর নেই, রাত নেই মানুষ আসছে তাদের প্রিয় মানুষের কথা শুনতে, আন্দোলন সংগ্রামের দিক নির্দেশনা পেতে। Related posts:লইসকা বিলে ডুবে যাওয়া নৌকার উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণাশেখ হেলালের মাতার মৃত্যুতে যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপির শোকব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিলে মোকতাদির চৌধুরী এমপি Post Views: ৯০ SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: