বাঘা যতীন ১৪২তম জন্মদিন আজ। বিজয়নগর বিজয়নগর নিউজ প্রকাশিত: ৫:১১ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৭, ২০২১ বাঘা যতীন’ নামটি অনেকেরই চেনা। কিন্তু এ নামের আড়ালে থাকা লোকটিকে অনেকেরই তেমন জানা নেই। ‘বাঘা যতীন’ নামে কিংবদন্তি হয়ে থাকা মানুষটির প্রকৃত নাম যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। এই কিংবদন্তির ১৪২তম জন্মদিন আজ। তার জন্ম ১৮৭৯ সালের ৭ ডিসেম্বর ঝিনাইদহ জেলার কয়া গ্রামে। তিনি একজন বিপ্লবী। সে সময়ের বিপ্লবী দল ‘যুগান্তর’-এর প্রধান নেতা ছিলেন তিনি। খালি হাতে লড়াই করে একটি বাঘ হত্যার পর তার নাম হয়ে যায় ‘বাঘা যতীন’। তিনি শিক্ষা জীবনে তৎকালীন সময়ে এন্ট্রান্স পরীক্ষা পাস করার পর সাঁটলিপি ও টাইপ শেখেন এবং পরবর্তী সময়ে বেঙ্গল গভর্নমেন্টের স্টেনোগ্রাফার নিযুক্ত হন। সেখানে তিনি নিজের দক্ষতা প্রমাণ করেন। শক্ত-সামর্থ্য ও নির্ভীকচিত্তের যতীনের মধ্যে আত্মমর্যাদা ও জাতীয়তাবোধ অত্যন্ত দৃঢ় ছিল। তিনি শরীর গঠনের জন্য গাছে চড়া, সাঁতার কাটা ও বন্দুক ছোঁড়ার প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। ১৯০৮ সাল। তখন যতীন আপাদমস্তক বিপ্লবী। এসময় যতীনসহ কয়েকজন বিপ্লবীকে আলীপুর ষড়যন্ত্র মামলায় জড়িত করা হয়। এ মামলার বিচারে বিপ্লবী বারীন্দ্রকুমার ঘোষকে যাবজ্জীবন নির্বাসন, অন্যদের বিভিন্ন মেয়াদে জেল এবং অনুশীলন সমিতিকে বেআইনি ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। সাক্ষ্য-প্রমাণের অভাবে যতীন এবং নরেনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তারা উভয়েই আত্মগোপন করেন এবং অন্যান্য বিপ্লবীর সঙ্গে গুপ্তভাবে বিপ্লবী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যান। যতীনকে পুনরায় হাওড়া-শিবপুর ষড়যন্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় এবং তার সঙ্গে অন্যান্য যারা গ্রেপ্তার হন তাদের ‘যতীন গ্যাং’ নামে অভিহিত করা হয়। অত্যাচারের শিকার হয়ে তাদের মধ্যে কয়েকজনের মৃত্যু হয় এবং অপর কয়েকজন পাগল হয়ে যান। সাক্ষ্য-প্রমাণের অভাবে যতীন এ মামলা থেকেও মুক্তি পান। কিন্তু তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। জেলে থাকা অবস্থায় বিপ্লবী যতীন এবং নরেন সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের এক দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। তারা দেশপ্রেমিক বিভিন্ন দলকে ঐক্যবদ্ধ করার পরিকল্পনা করেন এবং এ উদ্দেশ্যে নরেন সন্ন্যাসিরূপে ব্যাপকভাবে সমস্ত ভারত ভ্রমণ করে বাংলাসহ বিভিন্ন এলাকার বিপ্লবীদের সংগঠিত করেন। বিভিন্ন দলের নেতৃবৃন্দ হুগলি এবং মেদিনীপুরের বন্যার ত্রাণকার্য উপলক্ষে একত্রিত হন। তারা যতীন মুখোপাধ্যায় এবং রাসবিহারী বসুকে যথাক্রমে বাংলা এবং উত্তর ভারতের নেতা মনোনীত করেন। ভারতবর্ষের বাইরেও বিপ্লবীদের সংগঠিত করার প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়। সানফ্রানসিসকো শহরে যুগান্তর আশ্রম প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে ইউরোপে অবস্থানরত ভারতীয় বিপ্লবীরা ‘ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্স পার্টি’ গঠনের উদ্দেশ্যে বার্লিনে সমবেত হন এবং তারা এতে জার্মানির সাহায্য কামনা করলে জার্মান সরকার সম্মত হয়। কলকাতাস্থ জার্মান কনসাল জেনারেলের সঙ্গে আলোচনার জন্য ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্স পার্টি যতীন মুখোপাধ্যায়ের নিকট একজন দূত পাঠান। ইতোমধ্যে যতীনকে বিপ্লবী দলসমূহের কমান্ডার-ইন-চিফ করা হয়। যতীনকে বালেশ্বরে (উড়িষ্যা) গুপ্ত অবস্থায় রেখে নরেন বাটাভিয়া যান এবং সেখানে জার্মান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জাহাজে অস্ত্র প্রেরণ ও অর্থনৈতিক সাহায্য বিষয়ে আলোচনা করেন। ১৯১৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর বালেশ্বরে বুড়ি বালামের তীরে ব্রিটিশ সেনাদের সঙ্গে লড়াইয়ে নিহত হন বাঘা যতীন। Related posts:শ্রমিকরাই দেশের চালিকা শক্তি মৃনাল চৌধুরী লিটনমুক্তিযোদ্ধা সায়েরা বেগমের যত দুংখব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যেভাবে সরকারি ত্রাণের জন্য আবেদন করবেন Post Views: ১০৬ SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: