মুক্তিযোদ্ধে চান্দুরার যোদ্ধ। মৃণাল চৌধুরী লিটন বিজয়নগর বিজয়নগর নিউজ প্রকাশিত: ৫:৩১ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২, ২০২১ ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ভোরে মুক্তিযোদ্ধারা অবস্থান নিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া–সিলেট মহাসড়েকের পাশে পাইকপাড়ায়। মুক্তিযোদ্ধারা কয়েকটি দলে বিভক্ত। সব মিলে এক ব্যাটালিয়ন শক্তির। নেতৃত্বে এ এস এম নাসিম (বীর বিক্রম)। তার নির্দেশে কিছুক্ষণ পর মুক্তিযোদ্ধাদের একাংশ (ব্রাভো [বি] কোম্পানি) গেল চান্দুরার এক মাইল উত্তর-পূর্ব দিকে। তাদের দায়িত্ব অগ্রসরমান মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। বি দল নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান নিয়েছে। এ খবর পাওয়ার পর বাকি মুক্তিযোদ্ধারা হরষপুর-সরাইল হয়ে রওনা হলেন চান্দুরার অভিমুখে। তিনটি দল—আলফা (এ), চার্লি (সি) ও ডেল্টা (ডি) কোম্পানি। তারা দ্রুত এগিয়ে যেতে থাকল। ডি দলে আছেন আবদুল মালেক। তাদের বাঁ দিকে এ ও সি দল। বেলা আনুমানিক দুইটা। ডি দল সরাইলের পথে শাহবাজপুরের কাছে পৌঁছে গেল। যুদ্ধের পরিকল্পনা অনুযায়ী ডি দল অগ্রসর হচ্ছে অন্য দুই দলের পেছনে। একদম সামনে সি দল। তাদের ওপর দায়িত্ব কৌশলে শাহবাজপুর সেতুর দখল নেওয়া। এই দলকে অণুসরণ করছে এ দল। দুই দলের মধ্যে আছে কিছুটা দূরত্ব। সবশেষে ডি দল। দলের সঙ্গে আছেন মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাটালিয়ন অধিনায়কও। এই অভিযানে বিকেলে এস ফোর্সের অধিনায়ক কে এম শফিউল্লাহমুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যোগ দেন। কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাসহ তার অবস্থান ডি দলের কিছুটা সামনে। তার ও ডি দলের মধ্যে ব্যবধান অল্প। ডি দলের মুক্তিযোদ্ধারা এগিয়ে যেতে থাকলেন দৃপ্ত পদভারে। তাদের সামনে কে এম শফিউল্লাহ। কোথাও তারা বাধা পাননি। বিকেলের দিকে তারা পৌঁছে গেলেন ইসলামপুরের কাছে। অদূরে চান্দুরা। এমন সময় সেখানে আকস্মিকভাবে হাজির হলো একদল পাকিস্তানি সেনা। হঠাৎ তাদের উপস্থিতিতে মুক্তিযোদ্ধারা কিছুটা বিভ্রান্ত। পাকিস্তানি সেনাদের এই উপস্থিতি একেবারে অনাকাঙ্ক্ষিত। আবদুল মালেকসহ মুক্তিযোদ্ধারা ভেবে পাচ্ছেন না, এটা কীভাবে ঘটল। কেননা, পেছনে আছে তাদের বি দল। তাদের ওপর দায়িত্ব অগ্রসরমান মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কে এম শফিউল্লাহ পাকিস্তানি সেনাদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু সেনারা সেই নির্দেশ অগ্রাহ্য করে গোলাগুলি শুরু করল। নিমেষে সেখানে শুরু হয়ে গেল তুমুল যুদ্ধ। আবদুল মালেকরা পড়ে গেলেন উভয় সংকটে। একদিকে কে এম শফিউল্লাহ পাকিস্তানি সেনাদের আওতায়, অন্যদিকে তারা ক্রসফায়ারের মধ্যে। আকস্মিকভাবে শুরু হওয়া যুদ্ধে ক্রসফায়ারে পড়ে আহত হয়েছেন তাদের অধিনায়ক এ এস এম নাসিমসহ কয়েকজন। আবদুল মালেক বিচলিত হলেন না। সাহসিকতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করে ঝাঁপিয়ে পড়লেন পাকিস্তানি সেনাদের ওপর। তাকে দেখে অণুপ্রাণিত হলেন তার অন্য সহযোদ্ধারাও। এই যুদ্ধে তিনি যথেষ্ট বীরত্ব ও সাহস প্রদর্শন করেন। [৩] Related posts:ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসামি ধরতে গিয়ে পুলিশের এএসআই খুনবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রেসক্লাব বিজয়নগর আলোচনা সভাভুল প্লাটফর্মে আছেন মির্জা ফখরুল Post Views: ১৩০ SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: