বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আমার মাও স্বাধীনতার একই স্বপ্ন দেখতেন: প্রধানমন্ত্রী বিজয়নগর বিজয়নগর নিউজ প্রকাশিত: ৯:৫৮ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৮, ২০২১ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের স্বাধীনতার জন্য তিনি জাতির পিতার সঙ্গে একই স্বপ্ন দেখতেন। এ দেশের মানুষ সুন্দর জীবন পাক, ভালোভাবে বাঁচুক এই প্রত্যাশা নিয়েই তিনি বাঙালির অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সবসময় ছিলেন সজাগ এবং দূরদর্শী। তাইতো একজন সাধারণ বাঙালি নারীর মতো স্বামী-সংসার, আত্মীয়-স্বজন নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার পর দেশ পুনর্গঠনে তিনি অনন্য ভূমিকা রেখে গেছেন। রোববার (৮ আগস্ট) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার স্মৃতির প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। তিনি বলেন, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকীর এবারের প্রতিপাদ্য- ‘বঙ্গমাতা সংকটে সংগ্রামে নির্ভীক সহযাত্রী’ যথার্থ হয়েছে। যেখানে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক, সামাজিক ও পারিবারিক জীবনে সর্বক্ষণের সহযোগী ও অনুপ্রেরণাদায়ী এই মহীয়সী নারীর কর্মময় জীবনের প্রকৃত অর্থ প্রতিফলিত হয়েছে বলে আমি মনে করি। আমি বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। তিনি আরও বলেন, মহীয়সী নারী ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ৩ বছর বয়সে তিনি পিতা এবং ৫ বছর বয়সে মাতাকে হারান। তিনি বঙ্গবন্ধুর পিতা-মাতার কাছে লালিত-পালিত হন এবং চাচাত ভাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সঙ্গে তার দাদা তাকে বিয়ে দেন। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী ফজিলাতুন্নেছা মুজিব আমৃত্যু স্বামীর পাশে থেকে একজন যোগ্য ও বিশ্বস্ত সহচর হিসেবে দেশ ও জাতি গঠনে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের রাজনৈতিক সাফল্যে বঙ্গমাতা উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। জাতির পিতা রাজনৈতিক কারণে প্রায়ই কারাগারে বন্দি থাকতেন। এই দুঃসহ সময়ে তিনি হিমালয়ের মতো অবিচল থেকে একদিকে স্বামীর কারামুক্তিসহ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন; অন্যদিকে সংসার, সন্তানদের লালন-পালন, শিক্ষাদান, বঙ্গবন্ধুকে প্রেরণা, শক্তি ও সাহস যুগিয়ে স্বাধীনতা এবং মুক্তির সংগ্রামকে সঠিক লক্ষ্যে নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ৬ দফা ও ১১ দফার আন্দোলনে তিনি বলিষ্ঠ অবদান রাখেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে গৃহবন্দি থেকে এবং পাকিস্তানে কারাবন্দি স্বামীর জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে গভীর অনিশ্চয়তা ও শঙ্কা সত্ত্বেও তিনি সীমাহীন ধৈর্য, সাহস ও বিচক্ষণতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তিনি যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেন। বিশেষ করে নির্যাতিত মা-বোনদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন এবং সামাজিকভাবে তাদের প্রতিষ্ঠিত করার উদ্যোগ নেন। দেশ ও জাতির জন্য তার অপরিসীম ত্যাগ, সহযোগিতা ও বিচক্ষণতার কারণে জাতি তাকে যথার্থই ‘বঙ্গমাতা’ উপাধিতে ভূষিত করেছে। শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতা ও দেশবিরোধী অপশক্তি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে জাতির পিতার সঙ্গে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবকেও সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করে, যা জাতির ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। তিনি বলেন, বঙ্গমাতা যে আদর্শ ও দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন তা যুগে যুগে বাঙালি নারীদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। আমি আশা করি, তার জীবনী চর্চার মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে। বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন, বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের অনেক অজানা অধ্যায় সম্পর্কে জানতে পারবে। আমি বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি। Related posts:ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ঐতিহ্য তিতাস নদীব্রাহ্মণবাড়িয়া লক ডাউনের সিদ্ধান্ত হতে পারে আজআল-মামুন সরকারের মৃত্যুতে মৃনাল চৌধুরী লিটনের শোক প্রকাশ Post Views: ২২৪ SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: