হেফাজতের শীর্ষ নেতাদের নামে মামলা না দেয়ার কারণ জানালেন আইজিপি

প্রকাশিত: ৭:৪৭ অপরাহ্ণ, মার্চ ৩১, ২০২১

বিতর্ক এড়াতে হেফাজতের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়নি বলে জানিয়েছেন পুলিশের ইনসপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) বেনজির আহমদ। তিনি বলেন, শীর্ষনেতারা স্পটে ছিলেন না। তবে তদন্তে ঘটনার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচে) হেফাজতকর্মীদের হামলায় আহত পুলিশ কর্মকর্তাদের দেখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ প্রধান বলেন, মামলায় হেফাজত নেতাদের নাম দেয়া হয়নি বিষয়টি এমন নয়। যারা হামলা করেছেন তাদের নামে মামলা হয়েছে। যারা নির্দেশদাতা তাদের নামও তদন্তে বেরিয়ে আসবে।

আইজিপি বলেন, আপনারা জানেন যে গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে হেফাজতের কর্মীরা সারাদেশে তাণ্ডব চালায়। প্রথমে বায়তুল মোকাররম মসজিদে ও পরে চট্টগ্রামের হাটহাজারি মাদ্রাসায় কোমলমতি ছাত্রদের ব্যবহার করা হয়। হাজার হাজার ছাত্র আমাদের হাটহাজারি থানা আক্রমণ করে। আগেও তারা একাধিকবার থানায় আক্রমণ করেছে। এছাড়া থানার পাশে ডাকবাংলো আছে, সেখানে তারা হামলা করে ভূমি অফিস জ্বালিয়ে দেয়।

বেনজীর আহমেদ বলেন, সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে ভূমি অফিসের সমস্ত কাগজপত্র ও ল্যান্ড রেকর্ডস একত্র করে জ্বালিয়ে দেয়া। ওই ঘটনা ওইখানেই শেষ। তবে ওই অঞ্চলের মানুষ বছরের পর বছর কষ্টে ভুগবেন। বাংলাদেশে ল্যান্ড রেকর্ডজনিত একটি বড় সমস্যা আছে। সেখানে যখন সরকারি রেকর্ডপত্র জ্বালিয়ে দেয়া হয় এর মানে হচ্ছে হাটহাজারি অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ আগামীতে বছরের পর বছর এই সমস্যায় ভুগবে।

তিনি প্রশ্ন রাখেন, হাটহাজারি মাদ্রাসার কোমলমতি ছাত্র-শিক্ষকরা কোন কারণে গ্রামের নিরীহ মানুষগুলোকে এই শাস্তি দিল? এগুলো গ্রামবাসী চিন্তা করে দেখবেন। যারা তাদেরকে সাহায্য করেন, দান করেন, জাকাত ফেতরা দেন, এদের মাদ্রাসা উন্নয়নে কাজ করেন। পুণ্য হবে এজন্য সাহায্য সহযোগিতা করেন। অথচ তারা এই শাস্তির ব্যবস্থা করেছেন হাটহাজারির নিরীহ গ্রামবাসীর জন্য।

পুলিশ প্রধান বলেন, হামলাকারীরা আমাদের একজন শিক্ষানবিশ এএসপিকে হত্যার চেষ্টা করেছে। সে থানায় প্রশিক্ষণে ছিল। ইন সার্ভিস ট্রেনিংয়ে তাকে তিন মাস থানায় থাকতে হয়। তাই সে ডাক বাংলোয় অবস্থান করছিল। তাকে ধরে নিয়ে গিয়ে বেদম মারধর করা হয়েছে। তাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তাণ্ডবের কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, সেখানে প্রেসক্লাবও তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। এমন কি সাংবাদিকরাও তাদের হাত থেকে ছাড়া পায়নি। ওখানেও একজন এএসপিকে মারধর করা হয়। আমাদের এই সহকর্মীদের জন্য

দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।

দেশের বিভিন্ন স্থানে মামলা করেছে পুলিশ। কিন্তু এসব মামলায় হেফাজতের শীর্ষ নেতাদের নাম উল্লেখ করা হয়নি। এমন প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, আমি মনে করি অনস্পট মামলা হয়েছে। পরে তদন্তে যার যার নাম উঠে আসবে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। বিষয়টি বিতর্কিত করতে চাই না। আমাদের দেশে একটা কাজ করলে তো দশ রকমের সমালোচনা শুরু হয়। আমরা মনে করি যারা হামলা করেছে, তাদেরকে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যদি নির্দেশদাতা থাকে তাহলে তারা আসবে।

সিএমএইচে চিকিৎসাধীন কর্মকর্তাদের খোঁজ-খবর নেন আইজিপি। তাদের শয্যাপাশে কিছু সময় অবস্থান করেন। এসময় চিকিৎসকদের সঙ্গেও আহতদের শারীরিক অবস্থা নিয়ে আলাপ করেন আইজিপি।