সাবেক মন্ত্রী, রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ আর নেই

প্রকাশিত: ৫:২৭ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৭, ২০২১

সাবেক মন্ত্রী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বাংলাদেশ সময় সাড়ে ছয়টায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। বাংলাদেশে তার মরদেহ আনার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলেও জানান তিনি।

গত ১ ফেব্রুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য মওদুদ আহমেদ সিঙ্গাপুরে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে তার চিকিৎসা চলছিল। ফুসফুসে পানি জমার কারণে অবস্থার অবনতি হলে গত ৯ মার্চ তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। তার কিডনির ডায়ালাইসিসও শুরু করা হয়।

মওদুদ আহমেদের পাশে তার সহধর্মিণী হাসনা মওদুদও ছিলেন। এর আগে ৩০ ডিসেম্বর রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ হ্রাস ও বুকে ব্যথা অনুভব করলে মওদুদ আহমেদকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে গত ৭ জানুয়ারি তার হৃদযন্ত্রে স্থায়ী পেসমেকার বসানো হয়।

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ ২৪ মে ১৯৪০ সালে ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান বাংলাদেশ) নোয়াখালী জেলার কোম্পানিগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মাওলানা মমতাজ উদ্দিন আহমেদ এবং মা বেগম আম্বিয়া খাতুন। ছয় ভাইবোনের মধ্যে মওদুদ আহমেদ চতুর্থ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মান পাশ করে বৃটেনের লন্ডনস্থ লিঙ্কন্স ইন থেকে ব্যারিস্টার-এ্যাট-ল’ ডিগ্রি অর্জন করেন। লন্ডনে পড়াশুনা করে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং হাইকোর্টে ওকালতি শুরু করেন। তিনি ব্লান্ড ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ব্যারিস্টার মওদুদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১-এ ইয়াহিয়া খান কর্তৃক আহুত গোলটেবিল বৈঠকে তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে ছিলেন।

মওদুদ আহমেদ নোয়াখালী জেলার কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা থেকে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৭-৭৯ সালে তিনি রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকারের মন্ত্রী ও উপদেষ্টা ছিলেন। ১৯৭৯ সালে তিনি প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৮৫ সালে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণকালে সরকারের তথ্য মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এক বছর পর ১৯৮৬ এ তাকে আবার উপ-প্রধানমন্ত্রী করা হয়। ১৯৮৮ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন।

১৯৮৯ সালে তাকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় এবং এরশাদ তাকে উপ-রাষ্ট্রপতি করেন। এরপর ১৯৯১ আবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। ২০০১ সালেও তিনি বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।