যতীন্দ্র সেনের স্মৃতিবিজড়িত বাড়ির উপর আঘাত এর চেয়ে আর লজ্বার কি হতে পারে- বক্তাগন

প্রকাশিত: ৬:৪৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৯, ২০২১

যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্তের মতো ব্রিটিশ বিরোধী কিংবদন্তির স্মৃতিবিজড়িত বাড়িতে বুলডোজারের আঘাত এর প্রতিবাদে ব্রাক্ষণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে কেন্দ্রীয় কর্মসুচীর অংশ হিসেবে আজ বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলা কমিটির উদ্যোগে এক বিশাল মানববন্দন অনুষ্ঠিত হয়।এতে সভাপতিত্ব কবেন জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা দিলীপ কুমার নাগ।মানববন্দনে বক্তব্য রাখেন জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারন সম্পাদক প্রদ্যুৎ রন্জন নাগ,প্রেসিডিয়াম সদস্য জহর লাল সাহা,সাংগাঠনিক সম্পাদক খোকন কান্তি আচায্য, হরিপদ ভৌমিক দুলাল,জেলা হিন্দু মহাজোটের সাধারন সম্পাদক প্রবীর চৌধূরী রিপন,জেলা ঐক্য পরিষদের আইন সম্পাদক এডঃ প্রণব কুমার দাস উত্তম,সদর উপজেলা সভাপতি প্রবীর কুমার দেব,সাধরন সম্পাদক সব্যসাচী পাল,জেলা পুজা পরিষদের সাধারন সম্পাদক পরিতোষ রায়,জেলা ঐক্য পরিষদের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবোধ চন্দ্র দাস,কানু লাল মজুনদার,অজিত দাস, সৎ সংঘ বিহারের সাধারন সম্পাদক স্বপন দেব,জেলা যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি নয়ন চন্দ্র দাস,ছাত্র ঐক্য পরিষদের সভাপতি সুভন আচায্য ও বিদ্যুৎ বৈদ্য প্রমুখ।মানববন্দনে বক্তারা বলেন যে দেশপ্রিয়র কন্ঠে ব্রিটিশের মসনদ কাঁপতো! যে দেশপ্রিয়র টাকায় গড়ে উঠেছে চট্টগ্রামের ডাক্তার খাস্তগীর বালিকা বিদ্যালয়, অপর্ণাচরণ বালিকা বিদ্যালয়, কুসুমকুমারী বালিকা বিদ্যালয়, ত্রাহিমেনকা সংগীত মহাবিদ্যালয়, জে এম সেন হল, জে এম সেন স্কুল এন্ড কলেজ, বর্তমানে এই বাড়ির শিশুবাগ স্কুল, চট্টগ্রাম সংস্কৃতিক কলেজ, চন্দনাইশস্থ বরমা ত্রাহিমেনকা উচ্চ বিদ্যালয়, বরমা ডিগ্রি কলেজ, বরমা উন্নতমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বরমা দাতব্য চিকিৎসালয়, ভারতের কলিকাতা ব্যারিস্টার যতীন্দ্র মোহন সেনগুপ্ত কলেজ, দুর্গাপুর ব্যারিস্টার যতীন্দ্র মোহন সেনগুপ্ত কলেজ সব অজস্র প্রতিষ্ঠান!
যাঁর অবদান চট্টগ্রামের সমস্ত মানুষ গায়ের রক্ত দিয়েও শোধ করতে পারবেনা তাঁর স্মৃতিবিজড়িত বাড়ির উপর আঘাত এর চেয়ে আর লজ্বার কি হতে পারে।আমরা আজকে মানববন্দন থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করছি।
তারা আরো বলেন যাঁর নামে কলকাতায় দেশপ্রিয় পার্ক। সর্বভারতীয় কংগ্রেসের সভাপতি তিনি। কলকাতার ৫ বারের মেয়র তিনি অথচ স্বাধীনতার জন্য নিজের সবটাকা বিলিয়েছেন এদেশের মানুষের জন্য। সহস্র বিপ্লবীদের পিছনে অকাতরে টাকা ঢেলেছেন দেশের স্বাধীনতার জন্য! ব্যারিস্টারি করে যে টাকা কামাই করেছেন সব মানবসেবায় দিয়েছেন, এক টাকাও নিজের বিলাসে ব্যয় করেননি; অথচ তিনি মরেছেন বিনা চিকিৎসায় জেলে!! একটা টাকাও রাখেননি উত্তরসূরীদের জন্য! তাঁর স্ত্রীও বাংলার মানুষের জন্য বিলিয়ে দিয়েছেন নিজেকে! তাঁর বাড়ির উপর আঘাত।এই বাড়িতে একসময় এসেছিলেন মহাত্মা গান্ধী, নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, মাওলানা মোহাম্মদ আলী, শরৎ বসু, শওকত আলীর মতো মানুষেরা।
আদালত নাকি ভূমিদস্যুদের পক্ষে রায় দিয়েছে! অথচ এটা অর্পিত সম্পত্তি। যে কারনে জেলা প্রশাসন ইজারা দেয় এই বাড়ি। বর্তমানে এখানে “শিশুবাগ” নামে একটা স্কুল আছে।
একটি দেশ কতোটুকু পচে গেলে সে দেশের আদালত ভূমিদস্যুদের পক্ষে যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্তের মতো কিংবদন্তির স্মৃতিবিজড়িত বাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দিতে আদেশ দিতে পারে! পুলিশ সহ যুবলীগ নেতা, সংসদের হুইপের পরিবারের সদস্যরা দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ভূমিদস্যুর পক্ষে!
অথচ এই বাড়িটির উচ্ছেদে কোন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ছিলোনা। কোন এসিল্যান্ড ও জানেনা! জেলা প্রশাসক বললেন তিনিও জানেন না! তবে পুলিশ কি করে এলো? আদালতের রায় কিভাবে হলো?
ভাগ্যিস আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত সহ সচেতন নাগরিক সমাজের অনেকে শুনেই ছুটে গিয়েছিলেন।
রানা দাশগুপ্ত ছুটে গিয়ে বললেন “এই ভবন ভাংতে হলে আগে আমাকে মেরে ফেলতে হবে। এটা ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত ভবন।”মানববন্দন শেষে এক বিক্ষোভ মিছিল হয়।