সরকারের উন্নয়নকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে দোকান নির্মাণের জন্য খাল বরাদ্দ দিচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ

প্রকাশিত: ২:৩৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৮, ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের বিরুদ্ধে দোকানঘর নির্মাণের জন্য জেলার বিজয়নগর উপজেলায় খাল বরাদ্দ দেওয়ার দরখাস্ত আহ্বানের অভিযোগ পাওয়া গেছে। খালটি বরাদ্দ দিলে ওই এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিজয়নগর উপজেলা মির্জাপুরের বাসিন্দা সাংবাদিক দীপক চৌধুরী বাপ্পী রবিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক বরাবর দেওয়া অভিযোগে উল্লেখ করেন, আখাউড়া-চান্দুরা, মির্জাপুর-হরষপুর সড়কের মির্জাপুর মৌজার ২৯০ দাগ,মির্জাপুর-হরষপুর সড়কের পাইকপাড়া মৌজার ৩৩৪ দাগ,একই সড়কের বাগদিয়ার ৩১০ দাগসহ বিজয়নগরের বিভিন্ন এলাকার জায়গা বরাদ্দের জন্য গত ২২ অক্টোবর একাধিক জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। যেসব দাগের কথা উল্লেখ করা আছে সেগুলো এখনো খাল হিসেবে বিদ্যমান। এসব খাল ভরাট করে ইজারাদাররা দোকানপাট নির্মাণ করলে এলাকায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়ার পাশাপাশি শত শত একর জমির সেচ কাজে বিঘ্ন ঘটবে। প্রাকৃতিক ভারসাম্য হুমকির মুখে পড়বে।তিনি আরো অভিযোগ করেন, উপজেলার যে জায়গার জন্য দরখাস্ত আহ্বান করা হয়েছে সেটির সামনে একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। কিন্তু সরকারি বিধি অনুযায়ী কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশে মার্কেট নির্মাণে নিষেধ আছে। খাল এবং জলাশয় রক্ষার জন্য আইনে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা ও প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনা থাকলেও এ ক্ষেত্রে জেলা পরিষদ সেটির তোয়াক্কা করেনি। সরকারের উন্নয়নকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে জেলা পরিষদ এ ধরনের বেআইনি উদ্যোগ নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। যে কারণে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পাশাপাশি আইনিভাবেও লড়ার বিষয়ে চিন্তা করছেন এলাকার মানুষ। এদিকে ৩০ নভেম্বর দরখাস্ত দাখিলের শেষ সময় হলেও প্রায় তিন সপ্তাহ পেরিয়ে এখনও অনেকের কাছ থেকে দরখাস্ত নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। জেলা পরিষদের কর্মচারী মো. আমির হোসেন অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার জন্য পছন্দের লোকজনকে ডেকে এনে দরখাস্ত জমা নিচ্ছেন।

জেলা পরিষদের ভূমি বিভাগের উচ্চমান সহকারী মো. আমির হোসেন অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। প্রথমে তিনি বলেন, নির্ধারিত তারিখের পর কারো কাছ থেকে আবেদন নেওয়া হয়নি। আবেদনকারীদের অনেকেই বিষয়টি স্বীকার করেছেন বললে তিনি জানান, অনেকে আবেগে দরখাস্ত নিয়ে আসে। নিয়ম অনুসারে দরখাস্ত রেখেছি। কিন্তু এগুলো বাতিল হয়ে যাবে।

জেলা পরিষদ সদস্য মো. জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ওই এলাকাটি আমার আওতাধীন। কিন্তু ভূমি লিজ দেওয়ার বিষয়ে আমার কোনো মতামত নেওয়া হয়নি। পরে জানতে পারি যে ভূমিটি লিজ দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে সেটি সম্পূর্ণ খাল। আর খালের পাশঘেঁষেই সরকারি রাস্তা। যে কারণে ওই জায়গা লিজ দিলে খাল ভরাট করে দোকান নির্মাণ করতে হবে। এতে ওসব এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে।

জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. শফিকুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, খালের যেন ক্ষতি না হয় সেদিক খেয়াল করেই ভূমি বরাদ্দ দেওয়া হবে। খালের পাশে যে খালি জায়গা আছে সেখানে দোকান করা যাবে। এতে ওই এলাকার মানুষেরই উপকার হবে। উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে এ ধরনের অভিযোগ করা হচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
বিজয়নগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন,বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অভিযোগ হয়ে থাকলে সেখান থেকে নির্দেশনা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।