অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ আর নেই বিজয়নগর বিজয়নগর নিউজ প্রকাশিত: ৬:১৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৭, ২০২০ শুক্রবার ভোরে ধানমণ্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালে তার মৃত্যু হয় বলে তার ছেলে জিয়া হাসান ইবনে আহমদ জানান। ১৯৯২-৯৬ সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করা অধ্যাপক এমাজউদ্দিন সর্বশেষ ইউনির্ভাসিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভের (ইউডা) উপাচার্য ছিলেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ বলেন, “গত রাত আড়াইটার দিকে স্যার অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। ভোর পৌনে ৬টায় আইসিইউতে মারা যান।” তার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান এক বিবৃতিতে বলেন, “একুশে পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ ছিলেন একজন প্রখ্যাত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক। … বয়োজ্যেষ্ঠ এই শিক্ষাবিদ মৃদুভাষী ও সৌজন্যবোধ সম্পন্ন ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন ।” এমাজউদ্দীন আহমদের মৃত্যুতে জাতি একজন ‘বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদকে’ হারাল বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক আখতারুজ্জামান। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদের জন্ম ১৯৩২ সালে অবিভক্ত বাংলার মালদহে। ভারত ভাগের পর তার পরিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জে চলে আসে। শিবগঞ্জের আদিনা সরকারি ফজলুল হক কলেজ ও রাজশাহী কলেজে পড়ালেখা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এমাজউদ্দীন। তিনি ফজলুল হক হলের নির্বাচিত ভিপিও ছিলেন। স্নাতকোত্তর শেষ করে রাজশাহী কলেজে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে এমাজউদ্দীনের পেশাজীবনের শুরু। পরে বিদেশে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে এসে ১৯৭০ সলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে যোগ দেন এমাজউদ্দীন। তিনি ডক্টরেট করেন কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে। অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ (ফাইল ছবি ) অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ (ফাইল ছবি ) দীর্ঘদিন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করা এমাজউদ্দীন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও প্রেভিসির দায়িত্বও পালন করেছেন। ১৯৯২ সালে তাকে দেওয়া হয় উপাচার্যের দায়িত্ব। ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি ওই পদে ছিলেন। ১৯৯৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসরের পর ইউনির্ভাসিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভে (ইউডা) যোগ দিয়েছিলেন তিনি। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপির প্রথম সরকারের সময় ১৯৯২ সালে শিক্ষা ক্ষেত্রের অবদানের জন্য একুশে পদক পান এমাজউদ্দীন আহমদ। বিএনপিতে কোনো পদে না থাকলেও খালেদা জিয়ার একজন পরামর্শদাতা হিসেবে তিনি পরিচিত ছিলেন। কবি আবদুল হাই শিকদারের সঙ্গে মিলে তিনি খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবন নিয়ে একটি বইও লিখেছেন। বিএনপি সমর্থক বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে গঠিত শত নাগরিক কমিটির সভাপতির দায়িত্বেও ছিলেন এমাজউদ্দীন। বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সদস্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের কথা, মধ্যযুগের রাষ্ট্র চিন্তা, তুলনামূলক রাজনীতি: রাজনৈতিক বিশ্লেষণ, বাংলাদেশে গণতন্ত্র সংকট, সমাজ ও রাজনীতি, গণতন্ত্রের ভবিষ্যত, আঞ্চলিক সহযোগিতা ও জাতীয় নিরাপত্তাসহ অর্ধশতাধিক বই লিখেছেন। তার স্ত্রী সেলিমা আহমদ ২০১৬ সালেই মারা গেছেন। অধ্যাপক দিলরুবা শওকতা আরা ইয়াসমিন ও অধ্যাপক দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন তাদের দুই মেয়ে। দুই ছেলের মধ্যে জিয়া হাসান ইবনে আহমদ সরকারি কর্মকর্তা, তানভীর ইকবাল ইবনে আহমদ একজন চিকিৎসক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধাপক জিন্নাত আরা নাজনীন জানান, শুক্রবার দুপুরে জুমার পর কাঁটাবন ঢাল মসজিদে তার বাবার জানাজা হবে। আসরের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে আরেক দফা জানাজা শেষে মীরপুরে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে স্ত্রীর পাশে দাফন করা হবে এমাজউদ্দীন আহমদকে। Related posts:বিজয়নগরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ২ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা জরিমানা আরোপএবার ৬১ জনকে বহিষ্কার করল বিএনপিমেয়র আইভীর বাড়িতে সাংসদ শামীম ওসমান Post Views: ৫৮৪ SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: