বিজয়নগরে মাদক ব্যাবসার হাট পর্ব ১

প্রকাশিত: ৮:৪১ অপরাহ্ণ, মে ২৫, ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক।। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সীমান্তবর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে এখন সক্রিয় তিন শতাধিকের উপরে মাদক ব্যবসায়ী। প্রতি দিন কোটি কোটি টাকার মাদক পাচার হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যোগসাজশে ব্যবসা। বিজয়নগরে শতাধিক মাদক ব্যবসায়ী তালিকায় রয়েছে স্থানীয় , জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালীসহ পুলিশের সদস্য। মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার আর মাদক উদ্ধারে পুলিশে ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। যদিও পুলিশ বলছে মাদকের বিরুদ্ধে তাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত আছে করোনা সংকটে যখন গোটা দেশ লকডাউনে, তখন বিজয়নগরে দিনরাত চলছে রমরমা মাদক ব্যবসা। ইয়াবা, ফেনসিডিল ও গাঁজাসহ সব ধরণের মাদক এখন প্রতিটি পাড়া মহল্লায় হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে। লকডাউনের অলস সময়ে পাড়া মহল্লায় সহজে হাত বাড়ালে মাদকের দেখা মেলায় সব শ্রেণি পেশার মানুষ মাদক সেবনে জড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী করোনা সংকট মোকাবেলায় এক গুচ্ছ মানবিক কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় মাদক কারবারিরা সুযোগ কাজে লাগিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, মাদক কারবারিদের বিভিন্ন মাদক সরবরাহ করেন খোদ পুলিশেরই বখে যাওয়া সদস্যরা। । এই সময়ে রমরমা মাদক ব্যবসায় পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এক শ্রেণি বখে যাওয়া মাদকসেবি সদস্যরা নানান ভাবে সহযোগিতা করছে বলে জানিয়েছেন মাদক কারবারিরা। এর পাশাপাশি এই মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে হাত রয়েছে পুলিশ এখন ওপেন সিক্রেট। মাদক সেবনও স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাকর্মীদের হাত রয়েছে। করোনায় সারাদেশে যানবাহন চলাচল বন্ধ, তবুও থেমে নেই মাদক পরিবহন। ভিন্নভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে মাদক কারবারিরা এক স্থান থেকে আরেক স্থানে মাদক আনা নেওয়া হচ্ছে প্রতিনিয়ত। জরুরি প্রয়োজনীয় জিনিস পরিবহন করার নামে মাদকের বড় ডিলারদের কাছ থেকে মাঝারি ডিলার, মাঝারি থেকে ক্ষুদ্র ডিলার বা খুচরা বিক্রাদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে, শেষ ধাপে ক্রেতা বা মাদকসেবিদের হাতে। মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল, রিক্সা/ভ্যান ও হেঁটে হেঁটে মাদক পরিবহন হচ্ছে বলে মাদক কারবারিরা জানিয়েছেন। করোনা সংকটে পুলিশ র‌্যাব এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দেশের প্রান্ত থেকে ইয়াবা, ফেন্সিডিল ও গাঁজাসহ মাদকদ্রব্যর বড় বড় চালান ধরছে প্রতিদিন, গ্রেফতারও করছে কারবারিদের। আলুর বস্তায় মিলছে গাঁজার বান্ডিল, মাছের ট্রাকে মিলছে ফেন্সিডিল, মোটরসাইকেলের সিটে এমনকি অ্যাম্বুলেন্সের ইঞ্জিনের ভিতরে লাখ লাখ ইয়াবা উদ্ধার করছে পুলিশ, র‌্যাব ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। জরুরি প্রয়োজনে ঘর থেকে বেরুনোর সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভ্যান/রিক্সা, মোটরসাইকেল/বাইসাইকেল ও পাঁয়ে হেটে মাঝারি ডিলাররা খুচরা বিক্রেতাদের মাদকের চালান পৌঁছে দিচ্ছে। পাড়া মহল্লায় খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, যেকোনো এলাকায় মাদক কারবারি করতে গেলে থানা পুলিশকে ম্যানেজ না করে টিকে থাকা অসম্ভব! থানা পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাকর্মীদের মাসোহারা দিতে হয়। নির্বিঘ্নে মাদক ব্যবসা করতে গেলে এসব ম্যানেজ করাই লাগে। অনেক মাদক কারবারি বলছেন পুলিশি অভিযান হয়তো করোনা সংকটে নেই তাইবলে মাসোহারা বন্ধ হয়নি৷ নিয়মিত তাদের মাসোহারা দিতেই হয়। জানিয়েছেন মাদক কারবারিরা। করোনা সংকটে দেশে লকডাউন চলায় সবাই বাসায় অবস্থান করছে, এই সুযোগে পাড়া মহল্লায় একটু আড্ড দিয়ে আসি বলে যারা নিয়মিত মাদক সেবন করে তাদের সঙ্গ মিশে অনিয়মিত মাদকসেবীরা মাদক সেবন করছে। চায়ের দোকান বন্ধ থাকলেও পাড়া-মহল্লা অলিগলি আড্ডা থেমে নেই। থেমে নেই মাদকসেবন। কোনো না কোনোভাবেই মাদক সংগ্রহ করে থাকে। নির্জনতার সুযোগে চুটিয়ে আড্ডার ছলে মাদকসেবন চলছে। করোনা সংকটে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সারাদেশে ব্যস্ত করোনাভইরাস মোকাবেলায় নানান সামাজিক কাজ নিয়ে। এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে মাদক সবখানে ছড়িয়ে দিচ্ছে কারবারিরা। লকডাউনে মাঝেও পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচিত মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান নিয়মিত রাখা। না হলে এই সুযোগে মাদক মহামারি আকার ধারণ করবে। করোনা সংকটের দোহাই দিয়ে মাদকের দামও বেড়েছে দ্বিগুন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দ্বিগুণেরও বেশী। ইয়াবা ফেন্সিডিল ও গাঁজা চালান আনা নেওয়া করা যাচ্ছেনা এমন দোহাই দিয়ে মাদক কারবারিরা মাদকের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। মাদকসেবিরা দাম বেশী হলেও মাদক সংগ্রহ করছে। নেশার কাছে মূল্য তুচ্ছ। তাদের একটাই কথা দাম বেশী হলেও হাতের নাগালেই মিলছে মাদক। পুলিশও কিছু বলছে না অথাৎ পুলিশের নজরদারির সুযোগ এই মূর্হুতে নেই বললেই চলে। রাস্তার ধারে বসে সন্ধ্যায় মাদক সেবন করলেও কেউ বলার নেই! কারণ রাস্তা থাকে ফাঁকা, সবাই বাসায় বন্দি। , মজুদের সংকট দেখিয়ে মাদক কারবারিরা মাদকের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তবুও থেমে নেই মাদকের কারবার। পাড়ায় পাড়ায় হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে মাদক। সীমান্ত এলাকা থেকে একাধিক কাত বদল করে মাদক দেশের এ প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে।( মাদক নিয়ে বিজয়নগর থানা পুলিশের ভুমিকা থাকছে আগামী পর্বে)