ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার শাহজাদাপুর ভূমি অফিসের নায়েব হারুনুর রশিদের দুর্নীতি

প্রকাশিত: ৩:১১ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২, ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর, সরাইল, নাসিরনগর এই তিন উপজেলার মধ্য দিয়ে বহমান সোনাই নদী। এই নদীতে বাঁধ দিয়ে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন এমনকি ভেকু দিয়ে অবাধে নদী গুলোর পাড়ের মাটি ও শত শত হেক্টর সরকারি জায়গার মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। যার ফলে ক্ষতির মুখে পড়ছে নদীতীরবর্তী ফসলি জমি। হুমকির মুখে রয়েছে নদী তীরবর্তী চলাচলের রাস্তা।

স্থানীয় লোকজন জানায়, বিজয়নগর উপজেলা বুধন্তী ইউপির ইসলামপুর গ্রামের নদী ঘাট নামক স্থানে সোনাই নদীতে বাঁধ দিয়ে সরাইল উপজেলা শাহবাজপুর ইউপি ভূমি অফিসের আওতাধীন মাতি গঙ্গা নামক স্থানে দীর্ঘদিন ধরে ড্রেজার ও ভেকুর সাহায্যে অবৈধভাবে মাটি ও বালু উত্তোলন করে আসছে একটি প্রভাবশালী চক্র। বিজয়নগর উপজেলার বুধন্তী ইউপির গ্রামের হাবিব মিয়া, ইউনুস, হারুন মিয়া, মিজান মিয়া, শফিক মিয়া, জামাল মিয়া, ফজল, মজলিস, ইদ্রিস, লোকমান মিয়া, ফায়েজ, মিনার মিয়া, কেন গ্রামের মোরশেদ মিয় সহ আরও কয়েকজনের এ চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে নদী থেকে ইচ্ছেমতো মাটিকাটা ও বালু উত্তোলন করে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে । এ ব্যাপারে তাদের বিরুদ্ধে আমরা বেশ কয়েকবার বিজয়নগর উপজেলা প্রশাসনকে বেশ কয়েকবার মৌখিক ও লিখিত ভাবে জানিয়েছি, এরই প্রেক্ষিতে বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার ভূমির নির্দেশে বুধন্তী ইউপির ভূমি অফিসের নায়েবকে মাটিকাটার স্থানে পাঠিয়েছেন। এমনকি ওনারা নিজেরা এসে বালু উত্তোলন ও মাটি কাটার ভেকু জব্দ করেছে ফলে কয়েকদিনের জন্য বালু ও মাটি কাটা বন্ধ ছিল। কিন্তু ইদানিং এ প্রভাবশালী চক্রটি বিজয়নগর উপজেলার সীমান্তবর্তী সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর ইউপির শাহজাদপুর ভূমি অফিসের আওতাধীন মাতিগঙ্গা নামক স্থানে ভেকুর সাহায্যে সরকারি জায়গা থেকে অবৈধভাবে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করছেন বিষয়টি সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করিলে উনার নির্দেশে গতকাল ১ মার্চ রবিবার দুপুরে শাহবাজপুর ইউপির শাহজাদাপুর ভূমি অফিসের নায়েব হারুন-অর-রশীদকে ঘটনাস্থলে এসে মাটি কাটা অবস্থায় দুইজন লোক সহ দুইটি ভেকু আটক করেন বলে জানান স্থানীয়রা।

ভেকু আটকের বিষয়ে শাহবাজপুর ইউপি’র শাহজাদপুর ভূমি অফিসের নায়েব হারুনুর রশিদের মোবাইল ফোনে প্রেসক্লাব বিজয়নগরের সভাপতি মৃণাল চৌধুরী লিটন জানতে চাইলে তিনি সততার নিশ্চিত করে বলেন দুইজন লোক সহ দুইটি ভিখু আটক করেছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবেন বলে জানান। কিন্তু বাস্তবে হারুনুর রশিদের বক্তব্যের কোন মিল নেই।

সরেজমিনে গিয়ে অনুসন্ধানে জানা যায়, আটককৃত দুইজন সহ ভেকু দুটিকে শাহজাদপুর ভূমি অফিসের নায়েব হারুনুর রশীদ অবৈধ অর্থের বিনিময়ে সঙ্ঘবদ্ধ চক্রটির যোগসাজশে ছেড়ে দিয়েছেন বলে বলে জানা যায়। পরবর্তীতে হারুনুর রশিদের কাছে উক্ত বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় লোক সহ ভেকু দুটিকে ছেড়ে দিয়েছেন বলে জানান।

এ ব্যাপারে সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ.এস. এম. মোসা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি)কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে, উনারা বলেন শাহজাদাপুর ভূমি অফিসের নায়েব হারুনুর রশীদ দুইজন লোক সহ ভেকু আটক এবং ছাড়ার বিষয়টি আমরা অবগত না। যদি এমনটি করে থাকে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।