প্রতিথযশা অধ্যাপক অজয় রায় আর নেই

প্রকাশিত: ৩:০৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৯, ২০১৯

ঢাকা: একুশে পদকপ্রাপ্ত পদার্থ বিজ্ঞানের বরেণ্য অধ্যাপক অজয় রায় (৮৫) রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। সোমবার (০৯ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বারডেম হাসপাতালের পরিচালক অব. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহীদুল হক মল্লিক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বার্ধক্যজনিত সমস্যা নিয়ে গত ২৫ নভেম্বর বারডেম হাসপাতালে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের সাবেক অধ্যাপক অজয় রায়। তারপর থেকে তাকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। অধ্যাপক অজয় রায় বিজ্ঞানমনস্ক লেখক ও মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা নিহত অভিজিৎ রায়ের বাবা। তিনি গত ২৮ অক্টোবর আদালতে গিয়ে ছেলে হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। শিক্ষা আন্দোলন মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক অজয় রায় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির প্রতিষ্ঠাতাদেরও একজন। সবশেষ তিনি নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা ছিলেন। পদার্থবিদ অজয় রায়ের দুটি গবেষণা নোবেল কমিটিতে আলোচিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অবসরে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির ইউজিসি অধ্যাপকও ছিলেন অজয় রায়। মুক্তিযোদ্ধা অজয় রায়ের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল ভাষা আন্দোলন ও ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানেও। অধ্যাপক অজয় রায় ১৯৩৫ সালের ১ মার্চ দিনাজপুরে জন্মগ্রহণ করেন। স্কুল ও কলেজজীবন দিনাজপুরে কাটানোর পর ১৯৫৭ সালে এমএসসি পাস করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে যোগ দেন। এরপর ১৯৫৯ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। ১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ডের লিডস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ও পরের বছর একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট ডক্টরেট সম্পন্ন করেন। এরপর ১৯৬৭ সালে শিক্ষক হিসাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফের যোগ দেন। অবসর নেওয়ার আগ পর্যন্ত সেখানেই কর্মরত ছিলেন তিনি। ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত সোয়া ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশে অভিজিৎ রায়কে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে জখম করে। আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত সাড়ে ১০টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান অভিজিৎ। এ ঘটনায় প‌র অ‌ভি‌জি‌তের বাবা অজয় রায় শাহবাগ থানায় এক‌টি হত্যা মামলা দা‌য়ের ক‌রেন। ছেলে হত্যার বিচারের জন্য আকুতি থাকলেও মৃত্যুর আগে তা দেখে যেতে পারলেন না প্রতিথযশা অধ্যাপক অজয় রায়।