আমি জীবিত আছি, আমাকে হেল্প করুন

প্রকাশিত: ১০:২০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৪, ২০১৯

প্রায় চার ঘণ্টার মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল মর্গে লাশের সারিতে পড়েছিল সৈকত। জ্ঞান ফিরলে বলছিল, “আমি জীবিত আছি, আমাকে হেল্প করুন।” হয়তো গলার স্বর এত ক্ষীণ ছিল যে কেউ খেয়াল করেনি। আর সেদিন সেখানকার পরিস্থিতিও তো খুব খারাপ ছিল রোগীদের নিয়ে। তাই হয়তো ডেডবডির দিকে কেউ খেয়াল করেনি’—বলছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত সৈকতের ছোট চাচা জাহিদ হাসান। বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকালে তার সঙ্গে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা হয়। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পুরাতন ভবনের একটি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন সৈকত। সেদিন সৈকতকে মৃত ভেবে চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে জাহিদ বলেন, ‘লাশের সারিতে মর্গে পড়ে থাকা অবস্থার কথা জানিয়ে সৈকত বলেন, “মাথা-নাক-মুখ দিয়ে অনবরত রক্ত ঝরছিল। ওরা বারবার বলছিল, এখানে একটা ডেডবডি আছে। আমি শুনতে পাচ্ছি, আমাকে তারা ডেডবডি বলছে। কিন্তু কিছু বলতে পারছিলাম না। তখন আমার তো জ্ঞান ফেরে আবার জ্ঞান হারাই এমন অবস্থা। কিন্তু কিছু বলার মতো শক্তি বা অবস্থা কোনোটাই ছিল না আমার।” ভাঙা ভাঙা উচ্চারণে, থেমে থেমে এসব কথা জানান সৈকত। সবাই ভেবেছিলেন সৈকত মারা গেছে, তাই তার দিকে কেউ খেয়াল করেননি। পরে কোনও রকমে সাহস করে নিজের শার্টের হাতা ছিঁড়ে মাথায় বেঁধে নিজেই গেছে একজনের কাছে। গিয়ে বলেছেন, আমাকে বাঁচান, আমার পরিবারকে জানান অ্যাক্সিডেন্টের কথা।’ জাহিদ বলেন, ‘এত রক্ত ঝরেছে, শার্ট প্যান্ট সব ভিজে শুকিয়ে শরীরের সঙ্গে শক্ত হয়ে গেছে। আমি নিজে সেসব গা থেকে খোলার জন্য কাঁচি দিয়ে কেটেছি। সৈকত কেবল একটা কথাই বারবার আমাকে বলছিল, “কাকা আমি যুদ্ধ করে এ পর্যন্ত এসেছি, নিজে বেঁচেছি”।’ সৈকতের আঘাত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ওর মুখের ভেতরের দুই পাশের চোয়াল ভেঙেছে। একটা দাঁতও ঠিক নেই, কথা বলতে গেলে ভেতরের মাড়ি উঠে আসে। মুখের ভেতরের পুরোটাই ভাঙা, আছে মাথায় আঘাত, কোমরে ব্যথা আছে। রক্ত দেওয়া হয়েছে তিনব্যাগ, আরও রেডি করে রাখতে বলেছেন চিকিৎসক।’সূত্র:শীর্ষনিউজ