বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী।

প্রকাশিত: ৮:০৯ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৭, ২০২২

সোমবার (৮ আগস্ট) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিনী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনে সাহস ও অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন এই মহিয়সী নারী বেগম ফজিলাতুন্নেছা।
বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালি জাতি দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তার শ্রেষ্ঠ অর্জন স্বাধীনতা লাভ করে। বাঙালি জাতির জন্য বঙ্গবন্ধুর এই আজীবন লড়াই-সংগ্রাম-আন্দোলনের নেপথ্যের প্রেরণাদাত্রী ছিলেন তার সহধর্মিনী ফজিলাতুন্নেছা মুজিব।

তিনি বঙ্গবন্ধুর সমগ্র রাজনৈতিক জীবন ছায়ার মতো অনুসরণ করে তার প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অফূরান প্রেরণার উৎস হয়ে ছিলেন।
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার কবিতায় লিখেছিলেন, ‘বিশ্বে যা কিছু চির সুন্দর, কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর’।
বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জীবনী বিশ্লেষণে বিদ্রোহী কবির এই কবিতার যথার্থ প্রতিফলন দেখা যায়। বঙ্গবন্ধু কারাগারে বন্দি থাকার সময় বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে যোগাযোগ এবং রাজনৈতিক দিক নির্দেশনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তিনি।
১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। তার ডাকনাম ছিল রেণু। বাবার নাম শেখ জহুরুল হক এবং মাতার নাম হোসনে আরা বেগম। এক ভাই দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন ছোট। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার সন্তান শেখ মুজিব দীর্ঘ আপসহীন লড়াই-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় শুধুমাত্র বাঙালি জাতির পিতাই হয়ে ওঠেননি, বিশ্ব বরেণ্য রাষ্ট্রনায়কে পরিণত হয়েছিলেন। তার পেছনে থেকে সব ধরনের সাহস যুগিয়েছেন, সহযোগিতার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তার সহধর্মিনী, এই মহিয়সী নারী বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব।
বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী হিসেবে দীর্ঘকাল তার পাশে থেকে মানবকল্যাণ ও রাজনীতির যে শিক্ষা তিনি লাভ করেছেন, তাতে তিনি একজন বিদুষী ও প্রজ্ঞাবান মানুষে রূপান্তরিত হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সমগ্র রাজনৈতিক জীবনে ছায়ার মতো অনুসরণ করে তার প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অফুরান প্রেরণার উৎস হয়েছিলেন বেগম মুজিব। বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ছয় দফা ঘোষণার পর বঙ্গবন্ধু যখন বার বার পাকিস্তানি শাসকদের হাতে বন্দি ছিলেন তখন আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা বঙ্গমাতার কাছে ছুটে আসতেন। তিনি তাদের বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা বুঝিয়ে দিতেন এবং লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার জন্য অনুপ্রেরণা যোগাতেন। মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি ভেঙে না পড়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন দৃঢ়তার সঙ্গে। বিশেষ করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় যখন বঙ্গবন্ধু প্যারোলে মুক্তি নিয়ে কিছু কুচক্রী মহল স্বাধীনতা সংগ্রামকে বিপন্ন করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছিল, তখন প্যারোলে মুক্তির বিপক্ষে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের দৃঢ়চেতা অবস্থান বাংলার মুক্তি সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করেছিল। যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তীকালে দেশ পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে কাজ করেছেন, গরিব-এতিম-অসহায় মানুষদের সাহায্য করেছেন, বীরাঙ্গনাদের বিয়ের ব্যবস্থা করে তাদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার মতো মহৎ দায়িত্ব পালন করেছেন। এই মহীয়সী নারী ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সপরিবারে স্বাধীনতা বিরোধী দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ঘাতকচক্রের বুলেটের আঘাতে নির্মমভাবে শহীদ হন।

জাতির পিতার আমৃত্যু সঙ্গী, বাংলার মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করবে আওয়ামী লীগ। এ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী স্বাস্থ্যবিধি মেনে যথাযথ মর্যাদায় পালন করার জন্য আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠনের সবস্তরের নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সুএ বিডি নিউজ২৪