হেফাজতি অপশক্তির বিরুদ্ধে একাই লড়েছেন এমপি মোকতাদির চৌধুরী

প্রকাশিত: ১১:৩২ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৩০, ২০২১

হেফাজতের সহিংসতা প্রতিরোধে জেলা আওয়ামী লীগের পাশে দাঁড়াননি জেলার এক মন্ত্রীসহ আ’লীগের ৫ এমপির কেও

, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে : গত ২৬ শে মার্চ থেকে ২৮ শে মার্চ তিনদিনব্যাপী ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকদের সহিংসতা হারমানিয়েছেন ৭১ সনের মুক্তিযুদ্ধের পাক বাহিনীর তান্ডব কেও। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সর্বকালের এই সহিংসতা মোকাবিলায় একাই হেফাজতিদের সাথে লড়াই করেছেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর-৩ আসনের সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।গত ২৬ শে মার্চ থেকে ২৮ শে মার্চ  তিনদিনব্যাপী ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকদের ধারা সংঘটিত নাশকতা সামাল দিতে গিয়ে হেফাজতের সমর্থকদের হাতে পরাজয় বরণকরে মাঠ ছেড়েদেন স্থানীয় প্রশাসনও। এমন ভয়ানক পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার একজন মন্ত্রীসহ  আওয়ামী লীগের আরো ৫ জন এমপি থাকলেও হেফাজতিদের নাশকতা প্রতিরোধে জেলা আওয়ামী লীগের পাশে এসে দাঁড়াননি এক মন্ত্রীসহ আ’লীগের ৫ এমপি ও তাদের কোন কর্মী-সমর্থকরা।এনিয়ে জেলার নাগরিক সমাজের কাছে ব্যাপক সমালোচনায় পড়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৪ আসন কসবা-আখাউড়ার সংসদ সদস্য, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক এমপি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য ক্যাপ্টেন (অব:) এবি এম তাজুল ইসলাম এমপি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের সংসদ সদস্য এবাদুল করিম বুলবুল এমপি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসন নাসিরনগরের সংসদ সদস্য এবি এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম এমপি ও জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম

শিউলী আজাদ এমপিপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের চেষ্টায় গত ২৬ শে মার্চ থেকে ২৮ শে মার্চ তিনদিনব্যাপী ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকদের সহিংসতাকালে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি ছাড়া এই জেলার আ’লীগের এক মন্ত্রীসহ আ’লীগের বাকী ৫ এমপির কোন প্রতিবাদের ভুমিকা চোঁখে পড়েনি কারোর।এমন কী তারা হেফাজতের সহিংসতার কান্ডের কোন প্রতিবাদ বিবৃতিও দেননি কোথাও। সেই ভয়ানক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হয়েছে সদরের সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীকে।জেলার গোয়েন্দা সংস্থার কয়েকটি সূত্র: বলছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর, বাঞ্চারামপুর, নবীনগর, কসবা, আখাউড়া, সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলা থেকে আগত হেফাজতে ইসলামের বিপুল সংখ্যক কর্মী-সমর্থকরা জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে এসে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের নাশকতায় অংশ নেন। নাশকতা চালিয়ে আবার ফিরে যান তারা।এসব বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মাহবুবুল আলম খোকন বলেন, হেফাজতিরা ধর্মের নামে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের চেষ্টায় গত ২৬ শে মার্চ থেকে ২৮ শে মার্চ তিনদিনব্যাপী ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যে সহিংসতা চালিয়েছেন, তা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ছাড়া জেলার আর কোন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী এমপিরা এগিয়ে আসেনি। এমনকি হেফাজতের অপশক্তির বিরুদ্ধে আপোষহীন হয়ে একাই লড়েছেন রবিউল ভাই। খোকন আরো বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার একজন প্রভাশালী মন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগের ৫ এমপিরই উচিত ছিল, জেলা আওয়ামী লীগের

পাশে দাঁড়ানোর।আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সংসদের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সভাপতি ও জেলা যুবলীগের প্রচার সম্পাদক এডভোকেট এনামুল হক কাজল বলেন, স্বাধীনতার চেতনাকে ধ্বংসকরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে জ্বালাও পোড়াও আগুন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করেছিলেন হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকরা। তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতে ইসলামের আগুন সন্ত্রাসের সহিংসতায় গোটা শহর রনক্ষেত হলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদরের সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ছাড়া আর কেও হেফাজতের নাশকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়নি। সদরের এমপি রবিউল ভাই একাই হেফাজতিদের অপশক্তির বিরুদ্ধে সাহসিকতার সহিত লড়াই করেছেন।ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব মোবাশ্বের আলম ভুইয়া বলেন, যেভাবে মোকতাদির চৌধুরী এই সহিংসতার ঘটনাটি নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে শক্ত অবস্থানে মোকাবিলা করেছেন, তিনি ছাড়া অন্য কারোর পক্ষে কখনও সম্ভব হতো না। তিনি বলেন, মোকতাদির চৌধুরী একাপক্ষেই হেফাজতি নামের স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। এখনও তিনি হেফাজতের সাথে আপোষহীন হয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথেনিয়ে লড়ে যাচ্ছেন। এই জেলার বাকী মন্ত্রী-এমপিরা আমাদের নেতাকে কোন সহায়তা করেনি। কেন ! করেনি আপনারা খুঁজে বেরকরুন।এদিকে গত ২৬ শে মার্চ থেকে ২৮ শে মার্চের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকদের সহিংসতার ১৪ দিন পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম শিউলী আজাদ এমপি। ঘটনার ২২ দিনের মাথায় আসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনের বাঞ্চারাপুরের এমপি, সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব:) এবি তাজুল ইসলাম। আর বাকী ৩ এমপির কোন পরিদর্শন বা বিবৃতি চোঁখে পড়েনি জেলার নাগরিক সমাজের।উল্লেখ্য, গত ২৬ শে মার্চ বাংলাদেশ হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ আগমনের বিরোধীতা করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরজুড়ে বিক্ষোভের নামে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ চালিয়ে সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ভাংচুরকরে আগুনে পুড়িয়ে দেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকরা। হামলায় জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়, পুলিশ ফাঁড়ি, ডিসির বাসভবন, এসপির বাসভবন, জেলা আওয়ামী লীগের অফিস, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের অফিস ও দুটি বাসভবন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা, টাউনক্লাব,  ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সংঙ্গীতাঙ্গন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, জেলা মৎস্য ভবন, জেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ ডাকবাংলো, পৌর মেয়রের বাসভবন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বাসভবন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন, চলাচলরত আন্তনগর ট্রেইনের কয়েকটি বগি, ইউনিভার্সিটি অব ব্রাহ্মণবাড়িয়া, শহীদ ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত ভাষা চত্ত্বর, জেলা শিল্পকলা একাডেমী ভবন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব, ব্রাহ্মণবাড়িয়া রিপোর্টাস ক্লাব, বিভিন্ন সংবাদ পত্র ও টেলিভিশনে কর্মরত সাংবাদিকদের অফিসকক্ষসহ জেলা শহরের প্রধান প্রধান সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ভাংচুর করে আগুনে পুড়িয়ে দেন হেফাজতের কর্মী-সমর্থকরা। এই ঘটনায় প্রায় অর্ধ-লক্ষ আসামীর নামে পৃথকভাবে মামলা হয়েছে

। গ্রেফতার হয়েছে প্রায় অর্ধ-হাজার আসামী।

সুএ সময়কাল নিউজ