বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ আর নেই

প্রকাশিত: ২:০৯ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২১

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ মারা গেছেন।
৮০ বছর বয়সী ইব্রাহিম খালেদ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চলতি মাসের শুরুতে শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। পরে করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত হলেও নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। গত ২১ ফেব্রুয়ারি তাকে বিএসএমএমইউতে স্থানান্তর করা হয়।

খোন্দকার সাঈদ বিজয়নগর নিউজ কে বলেন, “বাবার কোভিড নেগেটিভ হয়েছিল। কিন্তু বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরের দায়িত্ব ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সোনালী, অগ্রণী ও পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ।

তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাষ্ট্রপতি তার শোকবার্তায় বলেছেন, “বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের সুষ্ঠু বিকাশে খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ যে মেধা ও দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে গেছেন তা এদেশের মানুষ আজীবন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।”

ইব্রাহিম খালেদ তিনি ছিলেন কচিকাঁচার মেলার একজন পরিচালক। বেলা ১১টায় সেগুনবাগিচায় কচিকাঁচা ভবনে তার জানাজা হবে।

পরে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে আরেক দফা জানাজা শেষে গোপালগঞ্জে গ্রামের বাড়িতে তাকে দাফন করা হবে বলে তার ছেলে জানিয়েছেন ।

১৯৪১ সালে গোপালগঞ্জে জন্মগ্রহণ করা খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ পড়ালেখা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ভূগোলে স্নাতকোত্তর করার পর তিনি আইবিএ থেকে এমবিএ করেন। ১৯৬৩ সালে যোগ দেন ব্যাংকিং পেশায়।

১৯৯৮ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ছিলেন ইব্রাহিম খালেদ। ২০১০ সালে শেয়ারবাজারের পতনের কারণ অনুসন্ধানে সরকার যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল, তার নেতৃত্বে ছিলেন তিনি ।

ব্যাংক ও আর্থিক খাতের অনিয়মের বিষয়ে প্রকাশ্যে কথা বলে বিভিন্ন সময়ে ইব্রাহিম খালেদ আলোচনায় এসেছেন।

তার সেই ভূমিকার কথা স্মরণ করে জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ এক শোকবার্তায় বলেছেন, “প্রখ্যাত ব্যাংকার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপসহীন যোদ্ধা খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের বহুমুখী কর্মজীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিল ২০১০ সালে পুঁজিবাজারে ধসের পর তদন্ত প্রতিবেদন প্রণয়ন। আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সুশাসন নিয়েও গণমাধ্যমে সরব ছিলেন প্রয়াত এ ব্যাংকার।”

২০১১ সালে বাংলা একাডেমি ইব্রাহিম খালেদকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ দেয়। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েকে রেখে গেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই সাবেক ডেপুটি গভর্নর।