এমপির সমর্থকরা সচিবকে অবরুদ্ধ করে এসিল্যান্ডকে পিটিয়ে পানিতে ফেলে দিয়েছে

প্রকাশিত: ৯:৪১ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২১

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার চান্দপুরে স্বাস্থ্য সচিব মো. আব্দুল মান্নানের গ্রামের বাড়ির পেছনে একটি কমিউনিটি ক্লিনিকের রাস্তা নির্মাণকে কেন্দ্র করে স্থানীয় এমপি ও সচিবের সমর্থকদের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় এমপির সমর্থকদের হামলা ও ভাংচুরের পর নিজের ঘরে দীর্ঘ সময় অবরুদ্ধ থেকে অবশেষে র‌্যাব-পুলিশের প্রহরায় লম্বা গাড়ির বহর নিয়ে গ্রামের বাড়ি ছাড়লেন স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান।

ঘটনার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন কটিয়াদী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আশরাফুল আলম। তাকেও এমপির সমর্থকরা পিটিয়ে পানিতে ফেলে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

সচিব ও স্থানীয়রা জানান, এমপির নির্দেশে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে কিশোরগঞ্জ-২ আসনের এমপি বলেছেন, তাকে না জানিয়ে এলাকায় উন্নয়ন কাজ করা হচ্ছে। আর তিনি নির্দেশ দিলে এলাকাতেই আসতে পারবেন না স্বাস্থ্য সচিব।

শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) কটিয়াদীর প্রভাবশালী এমপি ও সচিবের লোকজনের মধ্যে এ লঙ্কাকাণ্ড ঘটে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, একটি কমিউনিটি ক্লিনিকের রাস্তা নির্মাণকে কেন্দ্র করে স্বাস্থ্যসচিব মো. আ. মান্নানের গ্রামের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় এসিল্যান্ডসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নানের অভিযোগ, বর্তমান এমপি নূর মোহাম্মদের নির্দেশে তার লোকজন নির্মানাধীন একটি কমিউনিটি ক্লিনিকের নির্মাণ কাজে হামলা ও ভাংচুর করে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে এমপি নূর মোহাম্মদ বলেছেন, সচিব সরকারি চাকুরি বিধি অমান্য করে এলাকায় নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

জানা গেছে, স্বাস্থ্য সচিব মো. আ. মান্নানের গ্রামের বাড়ি কটিয়াদী উপজেলার চান্দপুর গ্রামে। তার বাড়ির পেছনে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হচ্ছে।

অভিযোগ রয়েছে, শনিবার সকালে ওই ক্লিনিকের সংযোগ সড়কের কাজ চলার সময় স্থানীয় সাংসদ নূর মোহাম্মদের সমর্থকেরা ক্লিনিকে হামলা ও ভাংচুর করে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় কটিয়াদী উপজেলা সহকারী কমিশনার আশরাফুল আলমসহ বেশ ক’জন আহত হন।

সংঘর্ষের সময় সচিব মো. আবদুল মান্নান নিজের ঘরে ঘন্টাখানেক অবরুদ্ধ ছিলেন। তার অভিযোগ ক্ষমতাসীন দলের এমপির নির্দেশে তার লোকজন এ ঘটনা ঘটায়।

তবে এমপি নূর মোহাম্মদ বলেছেন, এলাকায় এমন একটি উন্নয়ন কাজ হচ্ছে, সেটি জানতেন না। এলাকার লোকজন এ বিষয়ে সচিবের কাছে জানতে গেলে তার লোকজন খারাপ আচরণ করেন।

এদিকে, খবর পেয়ে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র‍্যাব ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে বাড়ি থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেন সচিব আব্দুল মান্নান।

সন্ধ্যায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি জিহাদুল কবীর। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত আছে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার গ্রামের বাড়িতে আসেন স্বাস্থ্য সচিব। আজ রোববার জেলায় কোভিড টিকার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তার উপস্থিত থাকার কথা ছিল