রাত পৌহালেই শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস বিজয়নগর বিজয়নগর নিউজ প্রকাশিত: ৫:০১ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৩, ২০২০ . …শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস বাংলাদেশে প্রতিবছর বাংলাদেশে ১৪ ডিসেম্বর দিনটিকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ১৯৭১ সালের ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর সকল বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করে।.. .. ১৯৭১ সালে বছরব্যাপী পাকিস্তান সেনাবাহিনী বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। পরিকল্পিতভাবে ১৪ ডিসেম্বরে সবচেয়ে বেশীসংখ্যক বুদ্ধিজীবী হত্যা করা হয়েছিল। বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ এই দিনকে ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ ঘোষণা করেন। বাংলা একাডেমি কর্তৃক প্রকাশিত ‘শহিদ বুদ্ধিজীবী কোষগ্রন্থ’ (১৯৯৪) থেকে জানা যায়, ২৩২ জন বুদ্ধিজীবী নিহত হয়েছেন। তবে তালিকায় অসম্পূর্ণতার কথাও একই গ্রন্থে স্বীকার করা হয়েছে। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরের ১৮, মতান্তরে ২৯ তারিখে বেসরকারীভাবে গঠিত বুদ্ধিজীবী নিধন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি। এরপর “বুদ্ধিজীবী তদন্ত কমিটি” গঠিত হয়। এই কমিটির প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়, রাও ফরমান আলী এদেশের ২০,০০০ বুদ্ধিজীবীকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু এই পরিকল্পনা মতো হত্যাযজ্ঞ চলেনি। কারণ ফরমান আলীর লক্ষ্য ছিল শীর্ষ বুদ্ধিজীবীদেরকে গভর্নর হাউজে নিমন্ত্রণ করে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা। বুদ্ধিজীবী তদন্ত কমিটির প্রধান জহির রায়হান বলেছিলেন, ‘এরা নির্ভুলভাবে বাংলাদেশের গণতন্ত্রমনষ্ক বুদ্ধিজীবীদেরকে বাছাই করে আঘাত হেনেছে’। তবে ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি জহির রায়হান নিখোঁজ হন। তাজউদ্দিন আহমেদ একটি তদন্ত কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নেন ১৯৭১ সালের ৩১শে ডিসেম্বর। কিন্ত, তার ঔ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়নি। ১৯৭১ সালের ২৭ ডিসেম্বর দৈনিক আজাদের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের হত্যার পরিকল্পনাটি পূর্বেই করা হয় আর এতে সহায়তা করে জামায়াতে ইসলামী ও এর ছাত্র সংগঠন ছাত্রসংঘ। এ হত্যাকাণ্ডে সবচেয়ে সক্রিয় ছিলেন ব্রি. জে. আসলাম, ক্যাপ্টেন তারেক, কর্ণেল তাজ, কর্ণেল তাহের, ভিসি প্রফেসর ডঃ সৈয়দ সাজ্জাদ হোসইন, ডঃ মোহর আলী, আল বদরের এবিএম খালেক মজুমদার, আশরাফুজ্জামান ও চৌধুরী মাইনুদ্দিন এদের নেতৃত্ব দেয় মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী।[৫] ১৯৯৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘটনায় রমনা থানায় প্রথম মামলা দায়ের করা হয় (মামলা নম্বর ১৫)। সেখানে আলবদর বাহিনীর চৌধুরী মাইনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামানকে আসামি করা হয়। মামলাটি দায়ের করেন অধ্যাপক গিয়াসউদ্দিনের বোন ফরিদা বানু। শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ এ কাজে বাংলাদেশীদের মধ্যে রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনীর সদস্যরা তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছিল।… ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পুরো সময়টাতেই, পাকিস্তানী সৈন্যরা এবং তাদের স্থানীয় দোসররা, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল কথিত ইসলামী সেনাদল গ্রুপ আল-বদর ও আল-শামস বাহিনী শিক্ষক, ডাক্তার, প্রকৌশলী, কবি ও লেখকদের ক্রমে হত্যা করে। ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং মুক্তিবাহিনী যৌথ দলের কাছে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের মাত্র দুই দিন আগে, ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর সর্বোচ্চ সংখ্যক হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতে অধ্যাপক, সাংবাদিক, ডাক্তার, শিল্পী, প্রকৌশলী, লেখকসহ পূর্ব পাকিস্তানের ২০০ জন বুদ্ধিজীবীদের ঢাকায় একএিত করা হয়েছিল। মিরপুর, মোহাম্মদপুর, নাখালপাড়া, রাজারবাগ এবং শহরের বিভিন্ন স্থানের নির্যাতন সেলে চোখ বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাদের রায়েরবাজার এবং মিরপুরের মধ্যে সার্বজনীনভাবে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে ১৪ই ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে বাংলাদেশে শোক প্রকাশ করা হয়। এমনকি যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি পর ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সশস্ত্র সৈন্য ও তাদের সহযোগীদের কাছ থেকে শত্রুতামূলক আগ্নি রিপোর্ট পেয়েছিল। এই ধরনের ঘটনায়, ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা জহির রায়হান মিরপুরের সশস্ত্র বিহারীদের অভিযোগ মিরপুরে হত্যা করা হয়। নিহত বুদ্ধিজীবীদের সংখ্যা আনুমানিক নিম্নরূপ: শিক্ষাবিদ ৯৯১, সাংবাদিক ১৩, চিকিত্সক ৪৯, আইনজীবী ৪২, অন্যান্য (সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, শিল্পী এবং প্রকৌশলী) ১৬ জন।[৫] মার্চ ২৫ থেকে ১৬ ডিসেম্বর-এর মধ্যে দেশের বিভিন্ন অংশে যে সকল বুদ্ধিজীবী নিহত হয়েছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য, গোবিন্দ চন্দ্র দেব (ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়ের অধ্যাপক, দার্শনিক), মুনীর চৌধুরী (ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়ের অধ্যাপক, সাহিত্যিক, নাট্যকার), মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী (সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক), আনোয়ার পাশা (সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক), ডঃ মোহাম্মদ ফজলে রাব্বী (হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ), ডাঃ আলীম চৌধুরী (চক্ষুরোগের), শহীদুল্লাহ কায়সার (সাংবাদিক), নিজামউদ্দিন আহমেদ (রিপোর্টার), সেলিনা পারভীন (সাংবাদিক), আলতাফ মাহমুদ (গীতিকার ও সুরকার), ডঃ হাবিবুর রহমান (গণিত অধ্যাপক, রাশিয়া), সুখরঞ্জন সমাদ্দার (সংস্কৃত অধ্যাপক, রাশিয়া), মীর আব্দুল কলিম (মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক, রাবি), ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত (রাজনীতিবিদ), রনাদা প্রসাদ সাহা (মানবপ্রেমিক), লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোয়াজ্জেম হোসেন (প্রাক্তন সৈনিক), মামুন মাহমুদ (পুলিশ অফিসার ) এবং আরও অনেকে। Related posts:হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসায় অভিযান, বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধারশতবর্ষী মো আহম্মদ ফকির এর মৃত্যু মৃত্যুতে মোক্তাদির চৌধুরী এম পি র শোক প্রকাশহেফাজতের নায়েবে আমির আহমদ আবদুল কাদের গ্রেফতার Post Views: ২৯২ SHARES আইন-আদালত বিষয়: