শিক্ষার্থীদের মেস ভাড়া সমস্যা নিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে ছাত্রনেতা শ্রাবণের খোলা চিঠি

প্রকাশিত: ৬:২২ অপরাহ্ণ, মে ১, ২০২০

সারাবিশ্বের মত বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের পাদুর্ভাবে জনজীবন অনেকটা বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেও এ ভাইরাসে এখন পর্যন্ত ৪৩জন জন আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছেন দুইজন। চলছে জেলায় লকডাউন। এতে করে অনেকে কর্মহীন হয়ে পড়েছে। গ্রাম থেকে শহরে এসে পড়ালেখা করা শিক্ষার্থীরা পড়েছেন বেকায়দায়। কারণ এরমধ্যে অনেকেই বাসা ভাড়া করে থেকে টিউশনি বা পার্টটাইম কাজ করে নিজেদের পড়ালেখার খরচ চালাচ্ছেন। কিন্তু এখন টিউশনিসহ কাজকর্ম বন্ধ হওয়ায় তারা পড়েছে সমস্যায়। এই বিষয়ে জেলা প্রশাসকের বরাবর খোলা চিঠি লিখেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। নিচে খোলা চিঠিটি পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো- মাননীয় জেলা প্রশাসক মহোদয়, প্রথমেই শুভেচ্ছা জানাচ্ছি মহামারী করোনা ভাইরাসে জনসচেতনতা সৃষ্টি ও অসহায় মানুষের পাশে থেকে নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়ার জন্য। এছাড়াও আপনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করার পর জেলার উন্নয়নে ব্যাপক ভুমিকা রেখে যাচ্ছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর সুভাগ্য আপনার মত একজন জেলা প্রশাসক পাওয়ায়। বর্তমানে সারা বিশ্বের ন্যায় আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিও করোনা মহামারি তে আক্রান্ত। এমতাবস্থায় করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের জন্যে সারাদেশ সহ আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে লকডাউন চলছে। যার ফলে সকল সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সম্প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিদ্যানন্দীনি দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষনা দিয়েছেন যে, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকতে পারে। এমতাবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে মেস/বাসা ভাড়া করে থাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অন্যতম বড় বিদ্যাপীঠ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত শিক্ষার্থীদের আরও পাঁচ মাস ভাড়া বাসাতেই অবস্থান করতে হবে। কিন্তু ইতিমধ্যেই বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে মেস/বাসার মালিকগণ ভাড়া পরিশোধের জন্য তাগাদা দিচ্ছেন এবং করোনা পরিস্থিতি চলমান থাকলে স্বাভাবিকভাবেই এই তাগাদা ক্রমশ চাপে পরিণত হবে। আপনার সদয় জ্ঞ্যাতার্থে জানাচ্ছি যে, মেসে থাকা ৮০% শিক্ষার্থী গ্রামের দরিদ্র্য পরিবার থেকে উঠে আসা এবং শহরে এসে টিউশনি বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পার্ট টাইম চাকুরী করে নিজের পড়ালেখার ব্যয় নির্বাহ করে এবং এর থেকেই সম্ভব হলে পরিবারকেও সহায়তা করে থাকে। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে টিউশনিসহ কাজকর্ম না থাকায় তাদের পরিবারের আয়ের উৎসও বন্ধ রয়েছে। অতএব জনাবের নিকট আকুল আবেদন, আমি একজন সাধারণ ছাত্র এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধি হিসেবে, এই পরিস্থিতিতে শহরের মেস অধ্যুষিত মহল্লাগুলোর ম্যাচ মালিক ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ব্যক্তিদ্বয়ের সাথে আলোচনা ও মতামতের ভিত্তিতে মেস/বাসা ভাড়া পুরোপুরি সম্ভব না হলেও আংশিক ভাড়া মার্জনা করার জন্য বিবেচনা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জনাবের নিকট আকুল আবেদন এবং সহযোগিতা প্রার্থনা করছি। শুভেচ্ছান্তে- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় মেস / বাসা ভাড়া করে থাকা আপামর শিক্ষার্থীদের পক্ষে- জুবায়ের মাহমুদ খান শ্রাবণ সাধারণ সম্পাদক ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগ।