তৃতীয় দিনের মত বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতির কর্মবিরতিতে অচল বিজয়নগর উপজেলা প্রশাশনের কার্যক্রম

প্রকাশিত: ১:১৬ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতির সদস্যদের কর্মবিরতিতে অচল হয়ে পড়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলা প্রশাসনের সকল কার্যক্রম। সমিতির বিজয়নগর উপজেলা শাখা সদস্যরা তৃতীয় ও শেষ দিনের মতো কেন্দ্র ঘোষিত কর্মবিরতি সকাল ৯ টা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত পালন করেছে। অথচ যে কোন দপ্তরে মৌলিক কর্মঘন্টা হচ্ছে প্রতিদিন পূর্বাহ্ন।

কর্মবিরতি চলাবস্থায় বিজয়নগর উপজেলা প্রশাসনের সকল শাখার কার্যক্রমে অচলাবস্থা পরিলক্ষিত হয়েছে। সহকারীর কার্যক্রমের অভাবে কর্মকর্তারা নিজ নিজ দপ্তরে অলস সময় পার করছেন। সেবা প্রার্থীরা অসহায় হয়ে ফিরে আসছে দপ্তর গুলো থেকে। উপজেলা প্রশাসনের নির্ভরযোগ্য একজন কর্মকর্তা বলেন, এমনিতেই কাজের তুলনায় লোকবল কম। তারমধ্যে সহকারীদের কর্মবিরতি এভাবে চলতে থাকলে ফাইলজট শুরু হবে। সেবাপ্রার্থীরা কাংখিত ও তাদের ন্যয্য সেবা থেকে বঞ্চিত হবে। প্রশাসনের দুর্নাম হবে। এজন্য এবিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে সুরাহা হওয়া দরকার।

আজ বৃহস্পতিবার ২৭ শে ফেব্রুয়ারি বিজয়নগর উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ কর্মবিরতি পালন করা হয়।

কর্মবিরতিতে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসন, উপজলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) এর কার্যালয়ের মাঠ পর্যায়ে কর্মরত কর্মচারিদের গ্রেড ১১ -১৬ পদবি পরিবর্তন ও বেতন গ্রেড মন্ত্রণালয়ের নেই উন্নীতকরনের দাবিতে এ কর্মবিরতি গত ২৫ শে ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে।

বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে সমিতির সদস্যগণ কেন্দ্র ঘোষিত নিম্মোক্ত সময় অনুসারে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কর্মবিরতি পালন চলছে। গত ২৫ থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত যথাক্রমে ৩ দিন পূর্ণদিবস এ কর্মবিরতি পালন করছেন বলে সমিতির সদস্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সিএ কামরুল ইসলাম ভূঁইয়া ও সহকারী কমিশনার ভূমি কার্যালয়ের নাজির আতিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

এ সময় বিজয়নগর উপজেলা কালেক্টরেট সহকারী সমিতির সদস্যরা বলেন, সারাদেশের মতো বিজয়নগরে ও শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চলছে। ৩৩ বছর ধরে একই চেয়ারে একই পদে বসে আছি। আমাদের পরে এমএলএসএস পদে চাকুরীতে প্রবেশ করে কর্মকর্তা পর্যন্ত হয়ে গেছে। আমাদের অনেক জুনিয়রদের এখন স্যার ডাকতে হয়, উর্ধ্বতন কর্মকতা মানতে হয়। অথচ তাদের অভিজ্ঞতা ও কর্মদক্ষতা আমাদের চেয়ে অনেক কম। দেশের হাজার হাজার কর্মচারি আমাদের মতো এ অবস্থায় বাধ্য হয়ে চাকুরীতে আছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি ভালোভাবেই জানেন। তিনি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনাও দিয়েছেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের গাফিলতির জন্য আমাদের ন্যায্য ও যৌক্তিক দাবি পূরণ হচ্ছে না। কেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। তা আমরা বুঝে উঠতে পারছিনা। অথচ দেশের ভিন্ন ১৮ টি দপ্তরে এ দাবি ইতিমধ্যে পূরণ করা হয়েছে।

তারা আরো বলেন ,আমরা শৃঙ্খলার কারণে কোন অপ্রীতিকর, অসহিষ্ণু পরিস্থিতি সৃষ্টি না করে অনেকবার কর্তৃপক্ষকে আলটিমেটাম দিয়েছি। তাতে কোন কাজ হয়নি। আমরা লাগাতার পূর্ণ কর্মবিরতি পালন করলে দেশ হয়ত অচল হয়ে যাবে। তবে আমরা অতোদূর যেতে চাই না। আশা করি আমাদের আন্দোলন হার্ডলাইনে নিয়ে যাওয়ার আগেই আমাদের ন্যায্য ও যৌক্তিক দাবি সরকার মেনে নেবেন।